অরুণাচল নিয়ে ভারত-চীনের দ্বন্দ্বে বাংলাদেশও কিভাবে জড়াল

বাংলাদেশের কয়েকটি পাঠ্য বই ও ভূমি জরিপ অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে এশিয়া মহাদেশের মানচিত্রে অরুণাচল প্রদেশ ও আকসাই চীনকে ভারতের অংশ হিসেবে দেখানো হয়েছে— এমন অভিযোগ তুলে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাস। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, কিছু বইয়ে হংকং ও তাইওয়ানকে আলাদা দেশ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যা চীনের নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক বিষয়।

চীনের অভিযোগ অনুযায়ী, ইবতেদায়ি মাদ্রাসার চতুর্থ শ্রেণির “বাংলাদেশ অ্যান্ড গ্লোবাল স্টাডিজ” বইতে এশিয়ার মানচিত্রে চীন-ভারত সীমান্ত বিভ্রান্তিকর ভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। নবম ও দশম শ্রেণির পাঠ্য বইয়ে বাংলাদেশের রপ্তানির গন্তব্য তালিকায় হংকং ও তাইওয়ানকে পৃথক দেশ হিসেবে দেখানো হয়েছে। এ ছাড়া, ভূমি জরিপ অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটেও একই ধরনের ভুল মানচিত্র রয়েছে বলে চীনা দূতাবাস দাবি করেছে।

Left

বিশ্লেষকদের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে দক্ষিণ এশিয়ায় ভূরাজনৈতিক টানাপোড়েন এবং ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের পট পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে চীন বিষয়টিকে সামনে এনেছে। এক বিশেষজ্ঞের ভাষায়, “ভারত আমাদের প্রতিবেশী, তাদের আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সম্মান জানানো আমাদের রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব। অন্যদিকে, চীন আমাদের গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু রাষ্ট্র। চীনের দাবি আমরা মানতে পারি না, তবে তাদের উদ্বেগ ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। হতে পারে, চীন মনে করছে, বর্তমান সরকার তাদের বক্তব্য শুনতে আগ্রহী।” অরুণাচল প্রদেশ নিয়ে চীন বহুদিন ধরেই দাবি করে আসছে যে এটি চীনের ভূখণ্ডের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং ভারতের নিয়ন্ত্রণ অবৈধ। ভারত বরাবরই এ দাবি প্রত্যাখ্যান করে আসছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেছেন, “অরুণাচল প্রদেশ ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল, আছে এবং থাকবে। নাম পরিবর্তন করে বাস্তবতা বদলানো যাবে না। বাংলাদেশ সরকার এখনো আনুষ্ঠানিক ভাবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ভূরাজনৈতিক সমীকরণের জেরে চীনের এই অভিযোগ নতুন কূটনৈতিক আলোচনার সূচনা করতে পারে।

- Advertisement -

এই বিভাগের আরও সংবাদ