খোলপেটুয়া নদীর চরে আবারও ভাঙন আতঙ্কে এলাকাবাসী

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের ৯ নম্বর সোরা বেড়িবাঁধ সংলগ্ন খোলপেটুয়া নদীর চরে আবারও দেখা দিয়েছে ভয়াবহ ভাঙন। সাম্প্রতিক জোয়ারে নদীর চর ধসে পড়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে ফিরে এসেছে পুরনো আতঙ্ক।

গত বুধবার সকালে নদীর চরের বড় একটি অংশ ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এতে বেড়িবাঁধের পাশে বসবাসরত শতাধিক পরিবার এখন অস্থির সময় পার করছে। ভয়—আরেকটু ভাঙলেই হয়তো তলিয়ে যাবে তাদের ঘরবাড়ি, চাষের জমি ও ফসল।

স্থানীয় বাসিন্দা জয়দেব বাবু বলেন, “আমরা প্রতিদিন দেখি নদীর মাটি খসে পড়ছে। পানি বাড়লেই ভয়ে থাকি, আজ না হয় কাল আমাদের ঘর নদীতে চলে যাবে।”

নদীর তীর দুর্বল হয়ে পড়ায় সাম্প্রতিক জোয়ারের চাপে ভাঙন দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) দ্রুত বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা শুরু করেছে।

গাবুরা ইউনিয়নের সদস্য মনজু গাজী বলেন, “ভাঙনরোধে অস্থায়ীভাবে বস্তা ফেলা হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু এটা টেকসই সমাধান নয়। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ ছাড়া এ এলাকার মানুষের নিরাপত্তা আসবে না।”

খোলপেটুয়া নদীর তীরে গাবুরা, পদ্মপুকুর, এবং বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের বহু গ্রাম দীর্ঘদিন ধরেই জলবায়ু পরিবর্তন ও নদী ভাঙনের শিকার। প্রতি বর্ষায় নদীর জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায় ঘরবাড়ি, রাস্তা ও চাষের জমি। অনেক পরিবার বছরের পর বছর ধরে পুনর্বাসনের আশায় মানবেতর জীবন যাপন করছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উপকূলীয় অঞ্চলের নদীভাঙন এখন কেবল প্রাকৃতিক নয়, বরং পরিকল্পনাহীন বাঁধ নির্মাণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে। খোলপেটুয়া নদীর পাড়ে স্থায়ী বাঁধ ও সমন্বিত নদী ব্যবস্থাপনা না হলে আগামী বছরগুলোতে এই অঞ্চল আরও ঝুঁকির মুখে পড়বে।

ভাঙনের ভয় আর অনিশ্চয়তার মধ্যেই দিন কাটছে গাবুরার নদী-পাড়ের মানুষের—তাদের একটাই দাবি, “আমরা আর ঘর হারাতে চাই না।”

- Advertisement -

এই বিভাগের আরও সংবাদ