বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম: ২০টি চমকপ্রদ তথ্য
১. নজরুলের জীবন ছিল স্বতঃস্ফূর্ত; তিনি কোনো নিয়মের গন্ডিতে বেঁধে থাকতেন না।
২. লেখার জন্য কোনো বিশেষ পরিবেশের প্রয়োজন ছিল না—গাছতলায় বসে বা ঘরে বসেও তিনি লিখতেন।
৩. অনুষ্ঠানে তিনি ঝলমলে রঙিন পোশাক পরতেন, যাতে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ হয়।
৪. পড়াশোনায় ছিলেন বহুমুখী—কোরআন, গীতা, বাইবেল, বেদ, ত্রিপিটক থেকে শুরু করে শেলি, কিটস, কার্ল মার্ক্স, গোর্কি পর্যন্ত।
৫. বাংলা গানে নজরুলই একমাত্র ব্যক্তি, যিনি সব ধরনের বিষয় নিয়ে গান লিখেছেন; প্রায় ৮০০০ গান রচনা করেছিলেন।
৬. তিনি ছিলেন রসিক; একবার ভদ্রমহিলার প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, “না, আমি বেশ্যাসক্ত।”
৭. নজরুলের প্রেম শক্তি চরম; তার প্রেমে পড়েছেন বহু নারী-পুরুষ, এমনকি বুদ্ধদেব বসু ও তার স্ত্রীও।
৮. তিনি প্রচুর চা ও পান খেতেন, লেখার আগে পর্যাপ্ত পরিমাণ নিয়ে বসতেন।
৯. হস্তরেখা বিশারদ ছিলেন—অনেক সময় যা বলতেন তা সত্যি ঘটত।
১০. রাগান্বিত হলে তিনি বই বা কাগজ ছিঁড়ে ফেলতেন।
১১. অর্থের ব্যাপারে ছিলেন বেহিসাবি; বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে খরচ করতেই আনন্দ পেতেন।
১২. দুই পুত্রের ডাকনাম রেখেছিলেন সানি (কাজী সব্যসাচী) ও নিনি (কাজী অনিরুদ্ধ), সান ইয়াত-সেন ও লেনিনের নামে।
১৩. সন্তানদের জন্য ছিলেন মমতাময়; নিজে খাওয়াতেন, ছড়াও কাটতেন।
১৪. জনদরদি ছিলেন—দরিদ্র পরিবারের বিবাহ পর্যন্ত সাহায্য করতেন।
১৫. কবিতা ও গানের স্বত্ব বিক্রি করে কিনেছিলেন বিলাসবহুল ক্রাইসলার গাড়ি।
১৬. প্রমোদভ্রমণে প্রথম শ্রেণির ট্রেন কামরা ভাড়া করতেন।
১৭. দৃষ্টিশক্তি ছিল অসাধারণ, গভীর অন্ধকারেও দূরদূরান্তর দেখতে পারতেন।
১৮. ক্রীড়াপ্রেমী; ফুটবল ম্যাচে উপস্থিত থাকতেন পুত্রদের নিয়ে।
১৯. দক্ষ দাবাড়ু; সময় পেলেই দাবা খেলতেন।
২০. কলকাতার তিনতলা বাড়ির সামনে ছোট মাঠে খেলার নানা ঘটনা ঘটেছে—পুত্রদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলাতেও ছিলেন প্রাণবন্ত।
নজরুলের জীবন ছিল দুঃখ, আনন্দ, রঙ, প্রেম এবং বিদ্রোহের এক অনন্য সমাহার। বুদ্ধদেব বসু লিখেছিলেন:
“কণ্ঠে তাঁর হাসি, কণ্ঠে তাঁর গান, প্রাণে তাঁর অফুরান আনন্দ—সব মিলিয়ে মনোলুণ্ঠনকারী এক মানুষ।”
