শীতের ওসব ‘মন কেমনের’ বিকেলগুলো,
ভাপা পিঠার ধোঁয়ার মত মলিন এক কুয়াশায় ঘেরা
পত্রঝরা দিনের শেষ- দীঘল রাত,
রাত্রিবেলায় একটু ওম খোঁজার চেষ্টায়
আম্মার বোনা শীতের কাঁথায় দৈর্ঘ্য প্রস্থের হিসাবনিকাশ।
সিলিং ফ্যানের বিশ্রামে বহুদুর শূন্যতায় ভেসে আসা শব্দগুলো
মনে করায় আদিম এক মহাশূন্যে ভেসে আছি একা একা।
মন কেমনের ডাক কি তারা শোনে? শোনে কত বিষাদ মনে আঁকা?
এইযে শীতের বিষণ্ণতার ছোঁয়া- এইযে রাতে উষ্ণতারই খোঁজ-
মন কেমনের শীতের রাত্রি জানে?
একটা করে- পত্র ঝরে- আমার বুকে রোজ?
কেউ জানে না, পৌষের শীত জানে।
পত্রঝরা শীতের বিকেল বিষণ্ণতাই দেয়,
কেউ না মানুক, আম্মার বোনা শীতের কাঁথা মানে
ওমন নরম- শীতের ওম- আর কেই বা দেয়?
সবাই কি আর আম্মার বোনা শীতের কাঁথা?
কত যত্নে বুনেছে একেকটা ভালোবাসার শ্লোক
কি সুনিপুণ কারিগরের মত পুরনো শাড়িতে শৈল্পিক হাতে-
ফুটিয়ে তোলে উষ্ণতার ধ্রুপদী কাব্যমালা।
শীতের প্রগাঢ় নিরব রাতে সেই কাঁথার উষ্ণতায় ডুবে গিয়ে
আমি ভাবি- আম্মার চেয়ে বড় কবি আর কে আছে?
কেই বা পারে সুই সুতোয় কাব্য লিখতে?
কলম কালির কবির যুগ পেরিয়ে গেছে সেই তো কবেই
এখন সবাই কীবোর্ড চেপে জমায় কথা,
কাটাছেঁড়ার কাজটা এখন ব্যাকস্পেসেই কত্ত সহজ।
যুগের হাওয়া আম্মার গায়ে লাগেনি,
আম্মা এখনও যত্ন নিয়ে, বুক ভরা দরদ নিয়ে সুতোয় বোনে
একটা করে শীতের কাঁথা, একটা করে কাব্যগ্রন্থ।