• আজ- মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ পূর্বাহ্ন

পর্দা

লেখক : / ৪১২ বার দেখা হয়েছে
আপডেট : শুক্রবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৩

add 1
  • ফাহিয়া হক ইন্নি

বোরকা মানেই পর্দা, বোরকা পরা কোনো মেয়ে মানেই পর্দশীল। প্রত্যেক বাবা-মাই তাদের মেয়েদেরকে পর্দা করাতে বা পর্দায় রাখতে চায় এবং প্রত্যেক স্বামীও। ব্যাপারটা সুন্দর, পর্দা শুধু মেয়েদের জন্য এটাই বিশ্বাস করে আমাদের সমাজ। আর পর্দার একমাত্র ও অন্যতম উপাদান বোরকা, আমাদের সমাজের লোকজনের পর্দা সম্পর্কে কোনো নুন্যতম জ্ঞান ই নেই, পর্দা শব্দটি ফারসি যার আরবি প্রতিশব্দ, “হিজাব। পর্দা বা হিজাব শব্দটির বাংলা অর্থ হচ্ছে আবৃত করা, ঢেকে রাখা, আবরণ, আড়াল অন্তরাল, আচ্ছাদান, বস্ত্রাদি দ্বারা সৌন্দর্য ঢেকে রাখা আবৃত করা বা গোপন করা ইত্যাদি ।ইসলামী শরিয়তের পরিভাষায় নারী, পুরুষ উভয়ের চারিত্রি পবিত্রতা অর্জনের নিমিত্তে উভয়ের মাঝে শরিয়ত কর্তৃক নির্ধারিত যে আড়াল বা আবরণ কে পর্দা বলে। জানি না হিজাব বা পর্দা বলতেই সবার প্রথমে মাথায় আরে বোরকা পরিহিত মেয়েদের কথা, ইসলামে শুধু মেয়েদেরকেই পর্দা করতে হবে ছেলেদের কোনো পর্দা নেই এটা কিন্তু না, ইসলামে ছেলেদের পর্দা ও শালীন পোশাক পরিধানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, পর্দা শুধু মেয়েদের জন্য নয় ছেলেদের জন্যও। ইসলামে পুরুষদেরও এমন পোশাক পরতে বলা হয় যা তাদের আকৃতি প্রকাশ না করে বুক বা সিনা ঢেকে রাখতে হবে এবং নিচেরদিকে ঢেকে রাখতে হবে, হাঁটু ঢেকে রাখতে হবে এবং পুরুষদেরকে ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করতে হবে এবং শরীর ঢেকে রাখতে হবে, হিজাব শব্দটি প্রায়শই শারীরিক অর্থের উপর থাকে। কুরআনের আট স্থানে হিজাব বা পর্দার কথা বলা হয়েছে, চোখ থেকে শুরু হয় পর্দা এবং পর্দার নির্দেশটি প্রথমে পুরুষদেরকে দেওয়া হয়েছে পুরুষদেরকে তাদের দৃষ্টিনত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ নারীদের দিকে তাকানো থেকে, এড়িয়ে চলা, এবং দৃষ্টি নত রাখার নির্দেশ প্রথমে পুরুষদের দেওয়া হয়েছে পরে নারীদেরকে। সূরা নূরের ৩০নং আয়াতে বলা হয়েছে, “হে নবী নির্দেশনা দাও বিশ্বাসী পুরুষরা তাদের চেহেরা অবনমিত করবে এবং তাদের গোপনাঙ্গের হেফাজত করবে। এটা তাদের জন্য অধিকতর পবিত্র, নিশ্চয়ই তারা যা করে আল্লাহ সে সম্বন্ধে স্যমক অবগত। পুরুষ পর্দা সম্পর্কে নানা আয়াত এবং বিধান রয়েছে, যা আমাদের দেশে প্রকাশিত হয় না, প্রতিটা পরিবার তাদের মেয়েদের সম্পর্কে পোশাক কি হবে তা নির্ধারন করে দেয়, এমনকি মেয়েদের চালচলন আচার আচরণ তারাই নির্ধারণ করে কিন্তু তাদের ঘরে মধ্যে থাকা ছেলেদেরকে শিখায় না পর্দা কি। পর্দা ছেলেদের জন্যও, তাদেরকে দৃষ্টিনত রাখার নির্দেশও কে বা শিক্ষা দেয় না’ তাদের পরিবার থেকে কী বলা হয়, ছেলেরা নগ্ন থাকলেও সমস্যা নেই এই সুন্দর বাক্যটা প্রায়শই শুনা যায়। এর আর এই হলো এদেশের পারিবারিক, শিক্ষা একটা ছেলে কোনো মেয়ের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করলেও সেই ছেলেটাকে আমাদের সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিতে চরিত্রহীন বলা হয় না, আমাদের সমাজের চোখে পর্দা শুধু মেয়েদের জন্য আর পর্দার প্রধান ও একমাত্র উপকরণ বোরকা। বোরকা ছাড়া মেয়েটি যদি তার সমগ্র শরীর আর মুখ ঢেকে রাখে আর তাহলে তা পর্দা নয় পর্দা হয় শুধু বোরকা পরলে যদি মেয়ের পর্দার উপকরণ শুধু বোরকা হয়, আর ছেলেদের বা পুরুষদের পর্দার উপকরণ নির্ধারিত তাদের উচিত সতর ঢাকা পোশাক পায়জামা পাঞ্জাবি বা জুব্বা পরা। পর্দা অনুযায়ী ছেলেরা কোনো প্রকার শার্ট এবং স্ক্রিন প্যান্ট পরতে পারবে না। আমি যতই বলি না কেন পুরুষ পর্দার ব্যাপারে আমাদের সমাজের লোকেদের কোনো মাথাব্যথা নেই, আর আমাদের যে ইসলামিক বক্তাগণ রয়েছেন তারাও এ সমস্ত বিষয় পুরুষ পর্দা সম্পর্কে বলেন না আর বললেও খুবই কম, নারীদের নিয়েই তাদের যত মাথাব্যথা, পুরুষ শাসন প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় থাকেন ।সবসময় পর্দা এবং নিজেদেরকে সংযত রাখার বিষয়টা এ দেশে নারীদের উপরেই চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। আমার মনে হয় কোনো নারী যতই পর্দা করুক একটা পুরুষ যদি তাকে পর্দাকৃত অবস্থাও দেখে সে তার প্রতি আকৃষ্ট হতে পারে। কোনো কাপড় দিয়ে কোনো বস্তুকে ঢেকে রাখা হলেও বস্তুটির রংটা ছাড়া আকার আকৃতি বাইরে থেকে বোঝা যায়। তাই শুধু মেয়েদের পর্দা নিশ্চিত করলে হবে না পুরুষদের দৃষ্টিকে সংযত রাখতে হবে এবং পুরুষ পর্দাও ব্যাপারটাও দেখতে হবে। নারী পুরুষ প্রত্যেককেই লজ্জাশীলত বিষয়টা বজায় রাখা প্রয়োজন। আর আমাদে সমাজে লজ্জা ব্যাপারটা শুধু নারীর বিষয় বলে ধরে নেওয়া হয়, বলা হয়ে থাকে লজ্জা নারীদের অলংকার। লজ্জা ও পর্দা নারী-পুরুষ উভয় জন্যই। আমাদের সমাজের লোকজনের এ বিষয়গুলো জানা উচিত, আর পোশাক পরিধানের ব্যাপটা নারী দের ও পুরুষদের পর্দার মাঝে কিছুটা ভিন্নতা আছে কিন্তু কারো পোশাক নির্ধারিত করে দেওয়া হয়নি কোনো ধর্মে, কোনটা পুরুষদের পোশাক কোনটা নারীদের পোশাক তা নির্ধারণ করা হয় নি আমরা দেখতে পাই বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন জাতির মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন পোশাক পরিধান করতে দেখা যায়। তাই বলা যায় পোশাকের উৎপত্তি এবং বিভন্নতা কোনো ধর্ম থেকে হয় নি, মানুষের ভৌগলিক অবস্থা, সংস্কৃতি, সমাজ এসব থেকে হয়েছে। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) এর একটি হাদিস প্রায়শই দেখা যায়, নবী করিম (স) জানিত (অভিশাপ) দিয়েছেন সেসব নারীদেরকে যারা পুরুষদের বেশ ধারণ করে। এখানে পুরুষদের বেশ বলতে পুরুষদের পোশাকের কথা বোঝানো হয়নি বলে আমার মনে হয়। পুরুষ পর্দা ও নারী পর্দার যে ভিন্নতাগুলো রয়েছে যেমন : পুরুষদের মুখমন্ডল ঢকে না রাখা, মাথায় কাপড় না দেওয়ার এবং টাখনুর উপরে পোশাক পড়ার যে নির্দেশেনা গুলো রয়েছে একজন নারীও যদি এরূপ আচরণ করে তা সেটাকে পুরুষ বেশি পুরুষদের বেশী আচরণ বলে গন্য করা হয়।

add 1


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্যান্য লেখা সমূহ
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Sundarban IT