• আজ- শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩২ পূর্বাহ্ন

মাধবকুণ্ডে এক বিকেল

নাজমুল আলম মাহদী / ৪৮৯ বার দেখা হয়েছে
আপডেট : রবিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
মৌলভীবাজারের দর্শনীয় স্থান
মৌলভীবাজারের দর্শনীয় স্থান

add 1
  • নাজমুল আলম মাহদী

মৌলভী বাজারে প্রবেশ করেছি অনেক আগেই। এখন আকাঁবাঁকা মেঠো পথের মতো পথ ধরে চলছে গাড়ী। রাস্তার উভয় পাশে পাহাড়ের ন্যায় উঁচু-উঁচু টিলা। টিলার উপড়ে লোকজন বাড়ি বানিয়েছে। যে বাড়িগুলো দেখে চমৎকৃত না হয়ে পারা যায় না। এখন দুপুর। বাড়ি থেকে বের হয়েছিলাম কাক-ডাকা ভোরে। নিদ্রাহীন রাত কাটিয়ে। ভেবেছিলাম হয়তো সফরে আজ আর যাওয়া হবে না; কিন্তু সফরের প্রতি আমার প্রেম-ভালোবাসার কাছে হেরে গিয়েছিলো শারীরিক অসুস্থতার আপত্তি। গন্তব্যে পৌঁছে গাড়ী থেকে নামার পরেই বৃষ্টি নামলো। গুঁড়ি-গুঁড়ি বৃষ্টি। এপাশে-ওপাশে চা-বাগান। দূরে থেকেই দেখতে ভাল্লাগে বেশ। একেবারে সবুজ উঁচু-নিচু ভূমির মতোই যেনো ঢেউ খেলতে-খেলতে চোখে ধরা দেয়। বৃষ্টির পানিতে ভেজা প্রতিটি চা-পাতা। ছুঁয়ে দেখার প্রবল ইচ্ছে থাকা উচিত; কিন্তু আমার সে ইচ্ছে নেই। চমৎকার একটি জায়াগায় যাওয়ার পরও ভালো লাগা খুঁজে পেলাম না, মন ভালো না থাকার কারণে। যাক, সেদিকে গেলে পুরোটা গল্পই পানসে হয়ে যাবে। তাই সে দিকটা নিয়ে না লিখাই ভালো। দুপুরের খাওয়া-দাওয়া সারলাম বিকেল বেলার সূচনায়। খানা শেষে সুপ্রসিদ্ধ মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত দেখার জন্য ছুটলাম। নানান টাইপের মানুষের হৈ-হুল্লোড় আর অসহ্য চিৎকার -চেঁচামেচিতে এক-পাহাড় বিরক্তি বোধ করে, পাঁচ-সাত মিনিটের পথ যাপনের পর পৌঁছলাম স্বপ্নের সেই জলপ্রপাতে। মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত। ছোট বেলার বইয়ের পাতার আক্ষরিক রূপের সাহায্যে, স্মৃতির পাতায় নিজের মতো করে আঁকা জলপ্রপাত। পাহাড় থেকে বিরামহীন পানি পড়ছে। খোদার সৃজন দেখে চোখের তৃষ্ণা নিবারণের এক অসামান্য মাধ্যম হয়ে। এ-দিক-সেদিক ছড়িয়ে-ছিটিয়ে যাচ্ছে পানি। ইশ! যদি এমন একটা মুহূর্তে সেখানে বসতে পারতাম— যখন নিরবতা-নৈ:শব্দতায়ই কেবল ডুব দিতো চতুষ্পার্শ্ব। সাথে থাকতো অন্তরঙ্গ কেউ। যে নাশীদ শুনাতো— ‘ঐ নীল আকাশ সবুজ পৃথিবী সবই তোমার দান’ কন্ঠে এঁকে। তখন আমি অধীর আগ্রহী হয়ে শুনতাম তার গাওয়া। সেই সাথে রবের বিস্ময় ভরা সৃজন দেখে হারিয়ে যেতাম শোভামাখা অজানায়। কিন্তু ওখানের পরিবেশ আজ আমার চাওয়ার ঠিক বিপরীত। কোলাহলপূর্ণ। আবাল-বৃদ্ধ-বনিতাদের বিরক্তিকর শোরগোলে কান ঝালা-পালা হয়ে যাচ্ছে। প্রপাতের পানিতে ভিজে গায়ে লেপ্টে যাচ্ছে শিশু-কিশোর-যুবক এমনকি যুবতীদের কাপড়ও। কী এক লজ্জাজনক পরিস্থিতি! এখন সন্ধ্যা। আঁধার নামছে শান্ত পায়ে। সূর্য ফিরছে নীড়ে। বাড়ি ফেরার ক্ষণটায়ও ভালো না-লাগারা ভিড় জমালে, এ কথা ভেবে এক মুঠো তৃপ্তি অনুভব করলাম— কিছু হোক আর না হোক, অভিজ্ঞতা তো অর্জন করলাম। জানলাম, শিখলাম।

add 1


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্যান্য লেখা সমূহ
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Sundarban IT