গল্পটি ১৯৮৪ সালের। বৃদ্ধ ছমির রাত দিন শুধু গ্যাঙাতে থাকে, খাবো আমি দেশটা গিলে খাবো। ক্ষিধেতে আমার নাড়ী-ভূড়ি জ্বলে যেতেছে। সত্তর উর্দ্ধ বয়স ছমিরের। চুল দাড়ি আর একটিও কাচা নেই। বকের পালকের মত সব সাদা ফক ফক করছে। শরীর অবিন্যস্ত, ময়লা পোশাক পরিচ্ছদ সারাক্ষণ তার দেহটাকে ঘিরে রাখে-কোন দিকে তার খেয়াল নেই- সারা দিন খাবারের চিন্তা-মাঝে মাঝে বৃদ্ধ ছমির এমন ভাব প্রকাশ করে যে, দেশটা গিলে খেলেও তার ক্ষুধার নিবৃত্তি হবে না। কদিন হল ছমিরের জ্বর রুগ্ন শরীর আরো রুগ্ন হয়ে যাচ্ছে। দিনে দিনে মাসে মাসে শীতল হয়ে যায় দেহটা। আবার একটু কাঁকড়ার মতো নড়ে চড়ে উঠে কি যেন হিসেব নিকেশ কর। কথা বলতে পারে না ছমির। মস্তিস্ক বিকৃতির ভাবটা ঘটেছে তার ছেলে ফজলার পঙ্গু হবার পর থেকে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় পা হারায় ফজলা। সেদিন পা কেন স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনতে বাংলার দামাল ছেলেরা জীবন বিসর্জন দিতেও দ্বিধা বোধ করেনি। ফজলা যে মুক্তিযোদ্ধা এ কথা এখন আর অনেকেই স্বীকার করতে চায় না। কেউ বলে ডাকাতি করতে যেয়ে নাকি পা হারিয়েছে। এসব কথা শুনলে বড্ড খারাপ লাগে ফজলার। মনে হয় সমস্ত আকাশটা যে তার মাথায় ভেঙে পড়ছে। পার্শ্ববর্তী কোন মুক্তিযোদ্ধার সম্মেলনে তাকে ডাকা হয় না, জাতীয় দিনগুলো তার জীবনে স্রোতের মত এসে চলে যায়। এখন আর ওসব কথা ভাবার সময় হয় না ফজলার। চোখ মেলেই সে স্পষ্ট দেখতে পায় অভাব নামক অদৃশ্য বস্তুটা তার সংসারে ওৎ প্রোতভাবে ঘিরে আছে। মা মারা গেছে গত বছর, যক্ষ্মা হয়েছিলো। চিকিৎসা করাতে পারেনি ফজলা। বৃদ্ধ বাপটাও মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। এমন কিছু সহায় সম্বল তার নেই যে, তাই বিক্রি করে বাপের চিকিৎসার ব্যবস্থা করবে। হৈমন্তি সকাল। তবু আকাশটা মেঘলা, বৃষ্টি হচ্ছে টিপ টিপ করে। ফজলার স্ত্রী বলে শুধু শুধু বসে থাকলে চলবে? কখনো তাল পাতা কেটে ঘরের চালে ব্যান্ধে দাও নায় বলো জোরে দলক আসলি সব ভ্যাসে যাবেনে। স্ত্রী জোহরার কথা শুনে গা জ্বালা করে উঠে ফজলার। এক রকম লাফিয়ে উঠে সে বলে। তারা মারো আমিও সব কিছু করতে পারবো না। আমি কি খোড়া পায় গাছে উঠতে পারি? সেই মানিক ছ্যামড়াডা গেছে কনে তারে যাতি কও। মানিকের বয়স বারো। এই বয়সে খেলাধুলার প্রতি মানিকের দুর্বলতা থাকলেও মানিক খেলতে সময় পায় না কখনো কলমি শাক কখনো হ্যালেঞ্চা শাক তুলে বিক্রি করতে যায় গাঁয়ের হাটে। এক রকম বিনে পুজির ব্যবসা। মানিকের খুব ইচ্ছে কিছু কিছু করে টাকা পয়সা জমিয়ে মানিক একদিন বড় বাদামের দোকান দেবে। একদিন সে শহরে চলে যাবে বাদাম বিক্রি করতে। অনেক পয়সা হবে। সংসারে অভাব থাকবে না। এসব কথা ভাবতে কেমন জানি আনন্দ পায় মানিক। দুপুরে খাওয়ার চাল বাড়ন্ত। দুপুর হতে না হতে বৃদ্ধ শ্বশুর আবার দেশটাকে গিলে খেতে চাইবে। মানিক ছাড়া আরো দুজন ছোট ছোট ছেলে মেয়ে আছে। ক্ষুধা ওরাও সহ্য করতে পারে না, দুপুরে চাল নেই একথা ফজলাকে বলে কোন লাভ হবে না ভেবে জোহরা পা পাড়ায় পাশের মাতবরের বাড়ি। মাতবর লোকটা সুবেধের নয়। জোহরার দিকে কু দৃষ্টিতে তাকায়- কিন্তু মাতবরের স্ত্রী রহিমা বেগম দিল দরিয়া মানুষ। মানুষের দায় বেদায় দেখার অভ্যাস আছে। জোহরা তার অভাবের কথা খুলে বলে অকপটে রহিমা বিবির কাছে। রহিমা বিবি ঘর থেকে দুসের চাল এনে দেয়। সাথে একটা চাল কুমড়া। রহিমা বিবি জোহরার মাথায় হাত দিয়ে বলে যা জোহরা তুই কোন বিপদে পড়লে আমার কাছে আসিস আমি তোকে ফিরাবো না। আচ্ছা বলেই বেরিয়ে যায় জোহরা। মাতবর সুযোগ বুঝে পুকুরের পাশে ঝোপটাতে দাঁড়িয়ে থাকে। জোহরা তার পাশ কাটিয়ে যেতেই মাতবর গলা খকর দেয় জোহরা না দেখার ভান করে হাটতে থাকে। মাতবর আমতা আমতা করে বলে- দাঁড়াও ফজলা বৌ, তোমার সঙ্গে আমার কিছু কথা আছে। জোহরা ঘোমটায় সারা মুখ ঢেকে বলে কি কবেন তাড়াতাড়ি কন? কচ্ছিলাম তোমাদের তো খুব অভাব। তুমি তো আমাগো বাড়ি কাজ করলি পারো মেলা চাল টাকা পাবা। আমি এখন যাই। জোহরা চালগুলো আর কুমড়টা ঢাকতে চেষ্টা করে, কিন্তু পারে না। ওগুলোর দিকে দৃষ্টি যায় মাতবরের। মাতবর জোহরাকে সাহস যুগিয়ে বলে, আসলে আমাগো বিবির পরানডা দরিয়ার মতো কারো দুঃখ সইতে পারে না। মাতবরের দৃষ্টি এখন জোহরার বুক বরাবর। অভাব অনটনে বুকটা ভেঙে গেছে আগের তুলনায়। কিন্তু হায়েনার দৃষ্টি সে দিকেই চোখ ফেরায় না মাতবর। ছোট একটা কাশি দিয়ে মাতবর পুনরায় বলে তোমার সঙ্গে আমার একখান কথা আছে। এখন থাক পরে কবানে-তুমি এখন যাও ফজলা বৌ। হাফ ছেড়ে বাচে জোহরা- লোকটাকে ও বরাবরই ভয় করে। বিষাক্ত দুপুর ক্রমশ: গড়িয়ে যায়। কুমড়া দিয়ে আজ পেট ভরে ভাত খেয়েছে ওরা। বৃদ্ধ ছমিরের গ্যাঙানিটা আপাতত: আর নেই। যখন পাখিরা নীড়ে ফেরে- সূর্য লাল হয়ে যায় পশ্চিম আকাশে ঠিক তখনই ফজলাকে মাতব্বরের বাড়ির কাজের প্রস্তাবটা দেয় জোহরা। প্রস্তাব শুনে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে বলে, না খেয়ে মরব তবু তোরে ঐ শালার বাড়ি কাজ করতি যাতি দোব না, ও শালা মাতবর হলি হবে কি ও একটা জ্যান্ত নুচ্চ। জোহরা পরিস্কার জানতে পারে তার স্বামীর মত নেই। কিন্তু ভরাস হয় রহিমা বিবির কথা ভেবে। সে থাকতে জোহরার ইজ্জতের কোন ক্ষতি হবে না। কদিন হলো মানিকের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতে চলেছে। মানিক এখন বাদাম ওয়ালা। গলায় বাদামের ঝুড়ি ঝুলিয়ে গায়ের হাটে বাজারে বিক্রি করে বেড়ায়। মুনাফা যা হয় তার থেকে কিছু পয়সা বাপের হাতে তুলে দেয় মানিক। কি এক স্বস্তিতে বুক ভরে যায় ফজলার। এটুকু বয়সে ছেলে রোজগার করতে শিখেছে এটা কম কথা নয়। কখনো ফজলার জন্য টাটকা বাদাম নিয়ে আসে মানিক। পরম তৃপ্তিতে খায় সে। কখনো দাদুকে দেয়-কিন্তু দাদু চিবুতে পারে না। গালে নিয়ে শুধু নাড়া চাড়া করে। তারপর মানিকের মাথায় হাত বুলিয়ে কি যেন বিড় বিড় করে বলে-মনে হয় ওর জন্য দোয়া করে বৃদ্ধ। পড়ন্ত বিকেল; রাতের রান্নার জন্য পুকুর ঘাটে পানি আানতে যায় জোহরা। তখন অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে তাকে বেড়ে উঠা শিমুল গাছটার দিকে। মনে পড়ে যায় পুরানো স্মৃতিগুলো। যুদ্ধে যাবার আগে মানুষটা মন্দ ছিল না জোহরাকে হাসি আর আনন্দে ভরিয়ে রাখতো সারাক্ষণ। এক সঙ্গে পুকুরে গোসল করতে আসতো ওরা। শিমুল তলায় দাঁড়িয়ে খুব দুষ্টামি করত ফজলা। কখনো জোহরার ভরাট বুকে হাত রাখতো, কখনো জোহরাকে ঝাপটে চুমো খেত-জোহরা তখন লজ্জায় লাল হয়ে যেতো। গ্রামের লোকেরা বলত এ যুগের রাধাকৃষ্ণ দ্যাখো- কিন্তু পা হারাবার পর ফজলার মন যেন মরে গেল এখন আর কোন কথার রস খুঁজে পায় না ফজলা। সারাক্ষন ঝগড়া ঝাটি লেগে তাকে সংসারে। যুদ্ধের আগে ব্যবসা বাণিজ্য করে বেশ চলে যেত ফজলার। গঞ্জ থেকে আসার সময় জোহরার জন্য ঢাকাই শাড়ী, স্নো, পাউডার কিনে আনতো ফজলা-তারপর শুরু হত জোহরার চোখ ধাদিয়ে যাওয়া সাজ গোজ। সব যেন কপ্পুরের মত হাওয়ার মত উড়ে গেল। জোহরা জানতে পেল কি কারণে রহিমা বিবি তাকে ডেকে পাঠিয়েছে। সে তার অনেক দায় বেদায় দেখেছে না যেয়ে পারলো না জোহরা। জোহরাকে বসতে দিয়ে মাতবর বৌ রহিমা বিবি বলে কাল সকালে আমি একটু বাপের বাড়ি যাবো-তুই আমার সংসারটা একটু দেখিস জোহরা? জোহরা আমতা আমতা করতে থাকে। মাত্র একদিন থাকবো তুই কাজ করে সন্ধ্যার আগে বাড়ি চলে যাস। রহিমা বিবি পুনরায় বলে- এবার জোহরাকে রাজি হতে হয়। কি করে সে রহিমা বিবির কথা ফেলবে, মাতবরের চরিত্রের কথা কয়েক বার বলতে যেয়েও বলতে পারেনি জোহরা, শেষে রহিমা বিবি কি ভাববে, পরদিন সকাল- বাড়ির কাজ গুছিয়ে মাতবর বাড়ি যায় জোহরা দুপুরে জোহরাকে বাড়ি এসে রান্না বান্না করতে হবে। জোহরাকে দেখে মাতবর সহাস্যে বলে- তামার কোন ভয় নেই ফজলা বৌ-আমিতো আছি। ভয়ে বুক কেপে উঠে জোহরার। মাতবরেরর কথা মত রান্না ঘর, গোয়াল ঘর পরিস্কার করে বড় ঘর পরিস্কার করতে যায় জোহরা। হঠাৎ ঝড়ের বেগে ঘরে ঢোকে মাতবর। ভূত দেখার মত চমকে উঠে জোহরা। ঘর থেকে দ্রুত বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় সে। মাতবর জোহরাকে একরকম জোর করে জড়িয়ে ধরে বলে, তুমি আমার কাছে কি চাও ফজলা বৌ-তোমার যত টাকা পয়সা লাগে আমি দোব বিনিময়ে তুমি শুধু একবার রাজি হও। জবাই করা কবুতরের মতো কাঁপতে থাকে জোহরা, ভয়ার্ত কণ্ঠে বলে, আপনি আমারে যাতি দেন আমি আপনার কাছে কিছু চাই না- কিন্তু মাতবর নাছোড়, খামচে ধরে ব্লাউজটা। পুরানো ব্লাউজটা পচ পচ কর ছিড়ে যায়। জোহরার শরীরটা এখন একদম উদোম। জোর করে শুইয়ে দেয় বিছানায়, চেপে বসে জোহরার বুকের উপর। মাতবর জোর করে খামচে ধরে জোহরার ডান স্তনটা। জোহরার খুন চেপে যায় মাথায়। সব শক্তি প্রয়োগ করে সজোরে এক লাথি মারে মাতবরের মুখে। মাতবর চিৎ হয়ে পড়ে যায় মেঝেতে। সেই থেকে অগোছালো শাড়ী ব্লাউজ গায়ে ছুটে যায় নিজের বাড়িতে। ফজলা তখন দাওয়ায় বসেছিলো। জোহরার বে আব্রু শরীর দেখে ফজলা চেচিয়ে উঠে কনে গিলি হারামজাদী তোর এ অবস্থা কেন? ফজলার চোখ দুটি আগুনের মতো লাল। জোহরা, মেঝেতে যেয়ে শুয়ে পড়ে। বুকটার ভেরত তখনও ধড়ফড়ানি কমেনি। এরপর থেকে কদিন চাঁপা অসন্তোষ ভাব বিরাজ করে সংসারে। মনে হয় যেন নিরব রক্তপাত চলছে। এদিকে ফজলার পা যেখান থেকে কাটা হয়েছিল সেখান থেকে আবার পুজ কসানি ঝরতে শুরু করে। কিন্তু সেদিকে খেয়াল হয় না ফজলার। মাঝে মাঝে ফুলে গেলে পাটা ভারী মনে হয়। তখন কষ্ট হয় ফজলার। কদিন হল মানিকের খোজ নেই। কখনো বাড়ী ছেড়ে এক রাতের বেশি থাকে না মানিক। কিন্তু এবার তো ৭/৮ দিন হয়ে গেল। ফজলা গাঁয়ের মানুষের কাছে জিজ্ঞাসা করে তারা কেউ মানিকের খোঁজ জানে কিনা। কিন্তু কেউ সন্ধান দিতে পারে না মানিকের। জোহরা শুয়ে শুয়ে কাঁদে মানিকের জন্যে। এই বয়সে তাকে মায়ের কোলে থাকার কথা। কিন্তু সংসারের অভাব মোচন করতে বাদামের ঝুড়ি গলায় ঝুলিয়ে তাকে যেতে হয়েছে অনেক দুরে। বৃদ্ধ ছমির আর এখন স্পষ্ট করে ক্ষিধের কথাটা বলতে পারে না শুধু পেটে হাত বুলিয়ে সে বুঝিয়ে দেয় তার এখানো ক্ষুধার নিবৃত্তি হয়নি। এক বিভৎস্য বাসন্তি সকাল। সকাল থেকে কাকগুলো কা-কা ডেকে অশনি সংকেত জানিয়ে যায়। মনটা ভালো ঠেকে না ফজলার। জোহরাও মানিকের জন্য ভাত পানি ছাড়ার উপক্রম হয়। হঠাৎ দুজন লোক ফজলার বাড়িতে প্রবেশ করে। ফজলা ভাবে পথচারী বুঝি পথ ভুলে এসেছে সে ধারণা মিথ্যে হয়ে যায় যখন এক ব্যক্তি বলে। এটাই কি মুক্তিযোদ্ধা ফজলার বাড়ী? ফজলার ক্রাচে ভর করে উঠে দাঁড়িয়ে বলে হ্যাঁ হ্যাঁ আমিতো ফজলা আমার কোন সংবাদ আছে সরকার কি আমার জন্য কোন টাকা পয়সার ব্যবস্থা করেছে। অচেনা দুই ব্যক্তির চোখ তখন ছল ছল করছে একজন বিভর্ষ ভঙ্গিতে বলে আমরা মানিকের তরফ থেকে এসেছি। জোহরা মুখটা ঘোমটায় ঢেকে বলে হ্যাঁ হ্যাঁ আমার মানিক কোথায় আছে? আমার মানিক ভাল আছে তো? একজন দু’খানা লুঙ্গি আর পাঁচশ টাকা ফজলার হাতে দিয়ে বলে, মাকিন এগুলো আপনাদের জন্যে পাঠিয়েছে। একখানা আপনার আর একখানা আপনার বৃদ্ধ পিতার। আর এই টাকা গুলো দিয়ে ওর আম্মার জন্যে একখানা শাড়ী কিনে নিতে বলেছে। মানিকের পাঠানো সামগ্রী গুলোতে অসীম আন্দে টপটপ করে জল ঝরে পড়ে ফজলার চোখ দিয়ে। ফজলা জিজ্ঞাসা করে, আমার মানিক কবে বাড়ী আসকে কতি পারেন? অপরজনের কণ্ঠ আরো রুগ্ন হয়ে আসে। কান্না জড়িত কণ্ঠে বলে, আপনাদের মানিক আর কোনদিন বাড়ি আসবে না চাচা। গতকাল একটা নরখাদক ট্রাক মানিককে ধাক্কা মেরে চলে যায়। আমরা মানিককে হাসপাতালে নেওয়ার সময় মানিক এগুলো আমাদের হাতে দিয়ে এ দায়িত্বটা পালন করতে অনুরোধ করে। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারিনি। পথিমধ্যে মানিক মারা যায়। ফজলার সামনে সমস্ত পৃথিবী অন্ধকার হয়ে আসে হাত থেকে পড়ে যায় মানিকের পাঠানো জিনিসগুলো। জোহরা কেঁদে উঠে হু হু করে। তার বুকের মানিক তাকে ফাঁকি দিয়ে গেছে এ যেন জোহরা কিছুতেই ভাবতে পারে না। পাশ থেকে ছমিরের ঘড়ঘড়ানী শব্দ ফজলার কানে আসে ছমিরের মুখ জুড়ে লালা, গ্যাজলা, তাতে মশা মাছি বসেছে কিন্তু তাড়াবার শক্তি নেই। হয়তো ছমির ওপারে যাওয়ার ঘন্টা শুনতে পেয়েছে।