ডাকিছে চড়াই পলাশ শাখেতে
রঙ লোহমা মাখি,
ফাল্গুন আসিছে পূষ্পশাখেতে
বাধিতে রঙিন রাখি।
শিমুলের ডালে কোকিল খোকা
বাধিছে মধুর সূর,
রক্তকরবী হাসিয়া খোলিল
প্রভাত রাঙা দোর।
কদম কুমারী হাসিয়া হাকে
ও ভাই সব্যসাচী,
ফাল্গুনী সাজে আড়ঙ বসিছে
দেখিতে যাবে নাকি?
মুগ্ধ কন্ঠে কহিলাম, যাব বৈকি
কিন্তু কত দূর?
খুব দূরে নয়, খানিক বাদেই
সেই-যে ছাতিরচর।
যেথায় রজনী সুভিত হয়
শবনম-শিউলির পরে,
যেথায় সূর্য কিরণ ছড়ায়
প্রভাত রাঙা ভোরে।
যেথায় তারারা রাত-দুপুরে
নাইতে নামে বিলে,
সুতুই গাথিতে যেথায় কোহেলী
নানান পূষ্প তোলে।
সেথায় বহিছে ঘোড়াউত্রা
কল ধ্বনি মাখি তাহে,
তারি কিনারে বসিছে মেলা
মহা জন সমারূহে।
কৃষ্ণকলির হাত ধরিয়া
উঠিলাম তার রথে,
আড়ঙ দেখিতে পা বাড়ালাম
রুপ-নগরীর পথে।
বন পেরিয়ে মাঠ পেরিয়ে
পেরিয়ে হাওর বিল,
কৃষ্ণকলির রথ থামিলো
খোলিল রথের খীল।
কপাট দু’খান খুলিয়াই যেই
নজর দিলাম দূরে,
অজানা এক কল্লোলে মন
হারালো নব ভীরে।
মৃধু হাসি যেই ঝাপটে পড়ে
ছোলাম নদির কূল,
নগ্ন পায়ে মোর ঠেকলো যেন
আর্দ্র বালির দোল।
পদ -কলঙ্ক ধৌত করি
তটিণী-র নব স্রোতে,
ভীর ঠেলিয়া আরঙ দেখিয়া
হারালাম অজানাতে।
এতো দেখি সেই মোল্লা বাড়ির
হাজ্বী সাহেবের বিয়ে,
নানান কিসিমের লোক আসিছে
নানান লেবাস লয়ে।