সাতক্ষীরার মাটিতে এক ঐতিহাসিক দিন। জাতীয় নারী ফুটবল দলের সাফ চ্যাম্পিয়ন তিন কৃতি খেলোয়াড়—অধিনায়ক সাবিনা খাতুন, ডিফেন্ডার মাছুরা পারভীন, ও ডিফেন্ডার আফঈদা খন্দকার প্রান্তি—সংবর্ধিত হলেন জেলার গর্বিত মানুষদের ভালোবাসায়। জেলা প্রশাসন ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি কেবলমাত্র তাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের নয়, বরং দেশের ক্রীড়া ক্ষেত্রে সাতক্ষীরার অবদান ও ভবিষ্যতের সম্ভাবনাকেও তুলে ধরেছে।
অনুষ্ঠানে তাদের হাতে সংবর্ধনা স্মারক ও এক লাখ টাকার প্রাইজমানি তুলে দেওয়া হয়। জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ এই আয়োজনের সভাপতিত্ব করেন। অতিথিদের মধ্যে ছিলেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সৈয়দ ইফতেখার আলী এবং খেলোয়াড় আফঈদা খন্দকার প্রান্তির বাবা ও ফুটবল কোচ খন্দকার আরিফ হোসেন প্রিন্স।
খেলোয়াড়দের অনুভূতি: ভালোবাসা ও উন্নয়নের প্রত্যাশা: ডিফেন্ডার মাছুরা পারভীন মাইক্রোফোনে কম কথা বলার প্রসঙ্গ তুলে ফুটবলের প্রতি তার নিবেদন তুলে ধরেন। তার মতে, খেলাই তার জীবনের মূল কথা। সাবিনা খাতুনও তার বক্তব্যে সাতক্ষীরার ক্রীড়া উন্নয়নের অভাবের বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন। ১৫ বছরের অভিজ্ঞতায় তিনি দেখেছেন, সাতক্ষীরা জেলা স্টেডিয়ামে বড় কোনো টুর্নামেন্টের আয়োজন হয়নি। তিনি দাবি করেছেন, জেলার নতুন প্রজন্মকে খেলার মাঠে সুযোগ দিতে সঠিক পরিকল্পনা ও পরিচর্যার ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
স্থানীয় প্রশাসনের অঙ্গীকার: জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ এই তিন খেলোয়াড়কে “পুরো বাংলাদেশের গর্ব” হিসেবে অভিহিত করেন এবং সাতক্ষীরার খেলোয়াড়দের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণের সুযোগ বৃদ্ধির আশ্বাস দেন। এ ধরণের সংবর্ধনা যে কেবল খেলোয়াড়দের অনুপ্রাণিত করে তা নয়, বরং নতুন প্রজন্মের খেলোয়াড়দের জন্য একটি দিকনির্দেশক হয়ে উঠতে পারে।
উন্নয়ন ও সাফল্যের পথে এগিয়ে যাক সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরা দীর্ঘদিন ধরে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। তবে এখন সময় এসেছে সেই সাফল্যের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে আরও কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার। শুধুমাত্র সংবর্ধনায় সীমাবদ্ধ না থেকে জেলার ক্রীড়া অবকাঠামো উন্নয়ন এবং নতুন প্রতিভা খুঁজে বের করে সঠিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
জাতীয় পর্যায়ে সাতক্ষীরার এই তিন কৃতি ফুটবলারের সাফল্য প্রমাণ করে, সঠিক পরিচর্যা পেলে এই অঞ্চল থেকে আরও অনেক মেধাবী খেলোয়াড় উঠে আসতে পারে। জেলা প্রশাসন এবং স্থানীয় ক্রীড়া সংগঠনগুলোর উচিত এ বিষয়ে সক্রিয় ভূমিকা রাখা।
সাবিনা, মাছুরা ও আফঈদার মতো খেলোয়াড়দের স্বপ্নের পথে অনুপ্রাণিত করতে তাদের জন্য সঠিক পরিবেশ ও পৃষ্ঠপোষকতা নিশ্চিত করতে হবে। তাদের সাফল্যের গল্প যেন ভবিষ্যতের আরও অনেক সাফল্যের দ্বার খুলে দেয়।