রাজধানীর পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দপ্তরে ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যা করা হয়। ওই হত্যাকাণ্ডের পেছনে বিভিন্ন সময় নানা আলোচনা হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর সাবেক সেনা কর্মকর্তারা পিলখানা বিদ্রোহ নিয়ে মন্তব্য করেন। অনেকে হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড হিসেবে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার দলের নেতাদের নাম বলেন। এবার মুখ খুলেছেন তৎকালীন সেনাপ্রধান মইন ইউ আহমেদ।
ওয়ান-ইলেভেনের অন্যতম চরিত্র মইন ইউ আহমেদ গতকাল বৃহস্পতিবার তার ইউটিউব চ্যানেলে নিজের ভাষ্য তুলে ধরেন। সেদিন (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে সেনাসদরের কাজ শুরু হলে তিনি বিডিআরের ডিজি শাকিলের সঙ্গে কথা বলে কিছু মর্টার সেনাবাহিনী থেকে বিডিআরের কাছে দেওয়ার অনুমতি দেন।
৯টায় মিটিং শুরু হলে মইন ইউ আহমেদের কাছে খবর আসে পিলখানায় গণ্ডগোল হচ্ছে। তিনি নিজ উদ্যোগে সেনাবাহিনীর একটি ব্রিগেডকে অপারেশনের নির্দেশ দেন, যা ‘অপারেশন রেস্টোর অর্ডার’ নামে পরিচিত।
সেনাপ্রধানের ফোনে ডিজি বিডিআর শাকিল জানান, দরবার চলাকালীন সশস্ত্র সৈনিকদের আচরণ পরিকল্পিত মনে হয়। এরপর মইন ইউ আহমেদ সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং অপারেশনের অনুমতি চান।
বেলা ১১টার দিকে সেনাবাহিনীর ব্রিগেড পিলখানায় পৌঁছালে বিদ্রোহীরা আক্রমণ চালায়। ঘটনার সময়ে টিভি চ্যানেলের লাইভ কাভারেজ বিদ্রোহ ছড়িয়ে দিতে নেতিবাচক ভূমিকা পালন করে বলে মন্তব্য করেন মইন ইউ আহমেদ।
তিনি জানান, সরকার রাজনৈতিকভাবে এ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে। বিদ্রোহীরা দাবি করে, কোনো আলোচনার আগে সেনাবাহিনীকে পিলখানা থেকে সরে যেতে হবে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের সঙ্গে আলোচনার নির্দেশ দেন। মইন ইউ আহমেদ অফিসার হত্যার অবসান, আটক কর্মকর্তাদের মুক্তি, বিদ্রোহীদের আত্মসমপর্ণের দাবি জানাতে বলেন।
মইন ইউ আহমেদ জানান, সেনাবাহিনীর তদন্ত কমিটি সরকারের সাহায্য না পাওয়ায় তদন্ত সম্পন্ন করতে পারেনি। তিনি পিলখানা হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান এবং বিদ্রোহ নিয়ে তার লেখা বই প্রকাশের কথা জানান।