শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড—এ উক্তিটি যতই পুরনো হোক না কেন, এর গুরুত্ব আজও অম্লান। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা শুধুমাত্র সার্টিফিকেটধারী বেকার জনগোষ্ঠী তৈরি করছে, কিন্তু প্রকৃত মানবসম্পদ গঠনে তা ব্যর্থ। আজকের সমাজে শিক্ষা ব্যবস্থার অবক্ষয় এবং শিক্ষার রাজনীতিকরণ আমাদের শিক্ষাক্ষেত্রে সংকটের মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জাতীয় উন্নয়ন এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আমাদের শিক্ষানীতি যে সঠিক পথে পরিচালিত হচ্ছে না, তা প্রতিনিয়তই প্রমাণিত হচ্ছে।
আমাদের দেশে শিক্ষার মানোন্নয়নের অভাব এবং কর্মমুখী শিক্ষার দিকে নজর না দেয়ার কারণে ২৩ লাখের বেশি শিক্ষিত বেকার তৈরি হয়েছে। শিক্ষার রাজনীতিকরণ, শিক্ষকদের কোচিং ব্যবসার প্রতি ঝোঁক, এবং শিক্ষার্থীদের প্রকৃত দক্ষতা না গড়ে তোলা—এসব সমস্যার সমাধান ছাড়া আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন সম্ভব নয়।
সমাধানের প্রথম ধাপ হলো, শিক্ষানীতিকে সংস্কার করে নৈতিকতা ও সৃজনশীলতার মেলবন্ধন তৈরি করা। শহর ও গ্রামে সমান সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করে শিক্ষাকে সার্বজনীন করা প্রয়োজন। শিক্ষকের মর্যাদা ও আর্থিক সচ্ছলতা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে তারা শুধু কোচিং নয়, বরং আদর্শ মানবসম্পদ তৈরিতে মনোনিবেশ করেন।
শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে কর্মমুখী শিক্ষা এবং দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির লক্ষ্যে। এটি করতে না পারলে, আমরা কেবল বেকারত্বের হার বাড়াবো এবং দেশের উন্নয়নশীল অবস্থাকে দুর্বল করে তুলবো। আজকের শিক্ষানীতি হতে হবে এমন, যা কেবল পাঠ্যক্রমেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং শিক্ষার্থীদের চিন্তার প্রসার ঘটাবে এবং তাদেরকে আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার যোগ্য করে তুলবে।