আসরের পর থেকেই দিনের আবহাওয়াটা খুউব ভালো লাগার ছিলো। গায়ে প্রশান্তিভরা বাতাস মেখে-মেখে অটো গাড়ি দিয়ে বাজারে আসলাম। এখন চুল কাটতে হবে। মাথায় চুল জমেছে অনেক। সবার জন্য না হলেও আমার জন্য অনেক। ফাঁকা সেলুন খুঁজছি।
হঠাৎ প্রিয় এক উস্তাদজীর ডাক— মাহদী!
কাছে গেলাম। সালাম দিলাম। উস্তাদজী চোখে-মুখে অনেকটা আনন্দের রেখা ফুটিয়ে বললেন— ‘তোমার এ-সব লেখা কোথায় প্রকাশ হয়েছে ?’ উত্তর দেওয়ার আগেই একটি রেস্টুরেন্টে নিয়ে গেলেন। আমার পছন্দের জিনিস অর্ডার করলেন। তখন লেখা প্রকাশ সম্পর্কিত বিস্তারিত বিষয় বললাম। অতঃপর হৃদয়ে আনন্দের তৃপ্তি অনুভব করলাম আকাশসম। এ-দিকে চাচ্চুও প্রবাস থেকে লেখাগুলো দেখে খুশিতে গদগদ। চাচ্চুর বাঁধ ভাঙ্গা আনন্দ দেখে আমারও আনন্দের সীমা রইলো না। খুশিতে-খুশিতে আন্দোলিত হয়েছিলো তখন আমার হৃদ-মন।
এ-সব আনন্দে কিন্তু কোন খাদ ছিলো না। উস্তাদজী'র আনন্দ, চাচ্চুর আনন্দ কিংবা অন্যান্য সময় আব্বু-আম্মার একদম নির্ভেজাল আনন্দ, তাঁদের আনন্দে আমার হৃদয়ে বাঁধ ভাঙ্গা পুলক তরঙ্গায়িত হওয়া — কাঁচা হাতে খাতার সফেদ পাতায় টুকটাক আঁকিবুকি করে এ-সব আনন্দে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলা, নিশ্চয়ই খারাপ নয়।
আসলে আমাদের লেখালেখির প্রতি মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। কেনো প্রয়োজন? প্রয়োজন— চিন্তার একটি ক্ষেত্র তৈরির জন্যে; সাথে কখনো-সখনো হৃদয়ে আনন্দের জোয়ার আনার জন্যে অথবা খুবই প্রয়োজন ইবনুল জাওযি রাহিমাহুল্লাহ’র নিম্নের কথাটির জন্য।
আল্লামা ইবনুল জাওযি রাহ. (মৃ. ৫৯৭ হি.) বলেছেন, 'আমি মনে করি এবং এটাই সত্য যে, মৌখিকভাবে শিক্ষাদানের চেয়ে লেখালেখির উপকারিতা অনেক বেশি। কেননা আমি এই জীবনে হাতেগোনা কিছু শিক্ষার্থীকে মুখেমুখে পড়াতে পারব, কিন্তু আমার লেখা রচনা দ্বারা আমি অগণিত মানুষের নিকট পৌঁছে যেতে পারব; এমনকি যাদের এখনো জন্মও হয়নি।’
সূত্র— সায়দুল খাতির; ইবনুল জাওযি, পৃ. ৩৮৬, দারু ইবনে খুযায়মা, রিয়াদ, ১ম সংস্করণ ১৪১৮ হি./১৯৯৭ ঈ.
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. আব্দুর রহমান
লেখা পাঠানোর ইমেইল: sahityapata24@gmail.com