অভাব….হায়রে…হায়রে… রাক্ষসী অভাব
তোর এতটাই লোভনীয় রাক্ষসী লেলিহান ক্ষুধা,
যে মুষ্টিমেয় কিছু মানুষ ছাড়া
তোর ক্রোধে পৃথিবীর হতদরিদ্র বৃহৎ জনগোষ্ঠীর
জীবন-জীবিকা আজ অতি সংকীর্ণতার
নির্মম ভাগ্যের গন্ডিতে বাঁধা।
ভাগ্যের বিড়ম্বনায় তোর নির্মমতার শিকার হয়ে
নিত্যদিন জর্জরিত হয়ে অভাব-অনটনে
স্বপ্ন হারা আশাহীন জীবনে নিরাশার আঁধারে ডুবে
পিষ্ট হয় দু:খ, দূর্দশা, কষ্টের যাতাকলে,
অভাবের তাড়নায় জীবনের যত সুখ, শান্তি হারায়
হারায় জীবনের রঙ, শখ, আহ্লাদ
কত…কতশত সহস্র মানুষের যে দূর আশার মাঝে
না খেয়ে আজ অতি দুঃখ-কষ্টে জীবন চলে।
অভাব…অভাব…অভাব…হায়রে..রাক্ষসী অভাব…
শুধুই তোর জন্য ধনশূন্য গরীব, দু:খী, অভাবগ্রস্থ
আজ বস্ত্র কিনার সামর্থ্য নেই যাদের
প্রবল দারিদ্রতার প্রকটে পড়ে আর্থিক সংকটে যে
তারা সমাজের অন্য সব মানুষদের সাথে
বাজার দোকানপাট থেকে শুরু করে সব জায়গায়
লেনদেনে রাখতে পারেনা দেওয়া কথা,
কেনো…কেনো.. যে তুই বুঝিসনে একটু অসহায়
অভাবিদের দুঃখ, দূর্দশা, যন্ত্রণা, ব্যথা?
অভাব..তুই…তুই কি জানিস, তোর কারণেই আজ
হতদরিদ্ররা, যারা ন্যায়, নীতি, আদর্শবান,
তারা সবজায়গায় হয় বেইজ্জতি অপদস্ত অপমান
কোথাও যে তারা পাইনা কোন সম্মান।
তুই জানিস..সময়-অসময়ে যখন তুই আষ্টেপৃষ্টে
গরীব দুঃখীর ঘাড়ে চেপে বসিস
তখন একজন সহজসরল নীতিবান পাই কত কষ্ট,
অভাবে যখন হতে হয় তাকে নীতি ভ্রষ্ট?
শুধু তোরি জন্যই আজ নিম্ন মধ্যবিত্ত দরিদ্র ঘরের
আদর্শ শিক্ষিত বেকার যুবক যুবতীকে
অতি নগণ্য ভেবে যে ভৎসনা করে দেয় না চাকুরী
লোকসমাজে করেনা কেউ তাদের গণ্য,
তারা তাদের বৃদ্ধ, মা-বাবার মুখে রোজগার করে
তুলে দিতে পারেনা আজ একমুঠো অন্ন।
অভাব.. শুধু তোর নির্মমতার হিংস্র ছোবলে পড়ে,
কত স্বপ্ন ভরা জীবন ওষুধ চিকিৎসা বিনে
ক্ষণ মরণের কোলে ঢলে পড়ে অকালে যায় ঝরে।
এতটাই কি নাভী অবধি রাক্ষসী ক্ষুধা তোর.?
বল, এতটাই কি লালায়িত তুই?
নির্লজ্জ অভাব..তোর কি এতটুকুও মায়া লাগেনা
যে, দানবের মত করালগ্রাসী জিহ্বা বের করে
তুই সমূলে সব গিলে খেতে চাস
যত দরিদ্র, অভাবি, অর্থহীন মানবের রক্ত মাংস?
কেনো.. কেনো..তুই বুঝিসনে-রে অভাব,
দুঃস্থ, হতদরিদ্র খেটে খাওয়া দুঃখী মানুষজনদের
তোর হিংস্র ছোবলের কবলে পড়ে নষ্ট হয় স্বভাব।
অভাব তুই বুঝি দুঃস্থদের ভালোবাসিস খুব…
তাই বুঝি জড়িয়ে থাকিস ওদের জীবনের সাথে
কখনো তাই বুঝি ওদের করিসনে বিমুখ?
আর অর্থ, পুঁজিপতি, ধনীদের থেকে দূরে থাকিস
দিতে ওদের আরাম-আয়েশ যতো সুখ?
অভাব…তুই যে কতটা নিষ্ঠুর, নির্দয়, আর নির্মম,
তা-যে কেবল জানে নিম্ন শ্রম জীবি মানুষেরা…
যারা তোর থেকে একটু মুক্তি পেতে যুদ্ধ করে চলে
আজ প্রতিনিয়ত তাদের জীবনের সাথে
দিনে রাতে হাড়ভাঙ্গা কঠিন খাটুনি খাটতে যাদের
আজ দেহে ঝরে বুষ্টির মত নোনা ঘাম।