ধর্মপাতা: সুবহানাল্লাহ! সাধারণ একটি ইবাদত, কিন্তু মুছে যাবে আগের জীবনের সব গুনাহ। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানুষকে ইবাদতমুখী করার জন্য এরকম ছোট ছোট অসংখ্য আমলের ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু বিগত জীবনের সব গুনাহ মাফের ছোট্ট এ আমলটি কী?
হজরত যায়দ বিন খালিদ আল জুহানি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
مَنْ تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ وُضُوءَهُ ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ لَا يَسْهُو فِيهِمَا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ
‘যে ব্যক্তি সুন্দরভাবে উযূ করে, কোন ভুল না করে, এরপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করে, সেই ব্যক্তির পূর্বেকার (বিগত জীবনের) সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।’ (আবু দাউদ ৯০৫)
ছোট্ট এ হাদিসেই নয়, বরং আরও একাধিক বর্ণনা এসেছে- ২ রাকাত নামাজেই সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। তাহলো-
হজরত ওসমান ইবনে আফফান রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার অজুর মতো অজু করে (একাগ্রতার সঙ্গে) ২ রাকাত নামাজ পড়বে এবং এ সময় অন্তরে অন্য কোনো ধারণা বা চিন্তা হবে না অথবা কোনো কথা বলবে না। তবে তার আগের জীবনের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (বুখারি, মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ, আবু দাউদ, নাসাঈ, বাইহাকি, ইবনে হিব্বান)
অপর এক বর্ণনায় নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ২ রাকাত নামাজে জান্নাতের নিশ্চয়তা দিয়েছেন। হাদিসে এসেছে-
হজরত উকবাহ ইবনু আমির আল-জুহানি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কেউ উত্তমরূপে অজু করে একাগ্রচিত্তে খালেস অন্তরে দুই রাকাত নামাজ আদায় করলে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়।’ (আবু দাউদ, মুসলিম)
প্রতিটি হাদিসেই সুন্দরভাবে অজু এবং নবিজির মতো অজু করার কথা বলা হয়েছে। এখানে অজুর বিশেষত্ব কী? হ্যাঁ, অজুও মানুষকে গুনাহমুক্ত করে। হাদিসে পাকে অজুতে গুনাহ মাফের চমৎকার একটি বর্ণনা তুলে ধরেছেন এভাবে-
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যখন কোনো মুমিন অথবা মুসলিম বান্দা অজু করে এবং মুখমণ্ডল ধোয়- তার মুখমণ্ডল থেকে তার চোখের দ্বারা কৃত সব গুনাহ পানির সাথে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সাথে দূর হয়ে যায়। যখন সে তার দুই হাত ধোয়- তার দুই হাতের দ্বারা কৃত সব গুনাহ তার হাত থেকে পানির সাথে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সাথে দূরীভূত হয়ে যায়। এরপর সে সব গুনাহ থেকে পবিত্র হয়ে যায়।’ (তিরমিজি)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে উত্তমভাবে অজু করার তাওফিক দান করুন। অজুর পর ২ রাকাত নামাজ পড়ে নিজেদের বিগত জীবনের গুনাহ থেকে মুক্তি পাওয়ার তাওফিক দান করুন। হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।