• আজ- মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:০৮ পূর্বাহ্ন

মশা দমনে আমরা কীভাবে বয়াম-এক্যুরিয়াম ব্যবহার করতে পারি

আয়শা বিনতে ইসলাম / ৪০ বার দেখা হয়েছে
আপডেট : মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

add 1
  • আয়শা বিনতে ইসলাম

মশার আক্রমণ সর্বদাই আমাদের জন্য একটা বড় পীড়া। কিন্তু, যেই বদ্ধ পানিতে মশার লার্ভার জন্ম হয়, সেই পানিকেই যদি আমরা মশা দূরীভূত করার জন্য ব্যবহার করি, তাহলে কেমন হয়?

একটি খালি ৫০০ গ্রাম আচার কিংবা জেলির বয়ামই যথেষ্ট এর জন্য। এরকম বয়ামে গাছ কিংবা মাছ, অথবা উভয়ই ব্যবহার করে আমরা মশার আক্রমণ দমন করতে পারি। একই সঙ্গে, এভাবে আমরা ঘরের সৌন্দর্যও বৃদ্ধি করতে পারি। হাজার হাজার টাকাও এর পেছনে খরচ করার প্রয়োজন হবে না, কারণ সস্তা ও সহজলভ্য কিছু ব্যবহার করেই আমরা ঘরে বসে এরূপ এক্যুরিয়াম তৈরি করে নিতে পারি।

বয়াম-এক্যুরিয়াম তৈরি করার সময় আমরা একটি কাচের বয়াম পুনঃব্যবহার করে পরিবেশকে রক্ষা করতে পারি। বয়ামটি ভালোমতো পরিষ্কার করে নিলেই তো এটি এক্যুরিয়াম হিসেবে তৈরি হয়ে গেলো! তারপর পরিষ্কার ট্যাপ ওয়াটার ঢেলে দিলেই তো পুরোপুরি রেডি!

মাছ/ মাছ ও গাছ উভয়ের ব্যবহার

একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা! মাছ রাখলে খেয়াল করতে হবে যেন পানির উপরের পৃষ্ঠের ক্ষেত্র সর্বোচ্চ থাকে। গাণিতিক শোনাচ্ছে? কিছু করার নেই! গাণিতিক জ্ঞানটি প্রয়োগ করলেই তো অক্সিজেন সহজেই বায়ু থেকে পানিতে মিশে যেতে পারবে। এভাবে পোষা মাছের অক্সিজেনের ঘাটতি মিটবে।

কী ধরনের মাছ রাখবেন? ছোট আকারের গাপ্পি মাছ হলেই হবে। এরূপ মাছ বয়াম-এক্যুরিয়ামে পোষা যেতে পারে, কারণ এরা মশার লার্ভি খেয়ে ফেলতে সক্ষম। এদের লেজে সুন্দর রঙের চাকচিক্য থাকায় দেখতেও চমৎকার লাগে। দামও বেশি না।

এরকম ২টি অথবা ৩টি মাছ আমরা এক্যুরিয়ামটিতে রাখলে দেখতে বেশি অগোছালোও লাগবে না, আবার মাছগুলোও চলাফেরা করার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা পাবে।

মাছের সঙ্গে আমরা মানি প্ল্যান্ট এর মতো গাছ রাখতে পারি চাইলে। মানি প্ল্যান্ট এর ১টি/২টি পাতা পানিতে ডুবিয়ে রাখলে তা পানিতে মাছের শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য অক্সিজেনের পরিমাণকে বৃদ্ধি করবে। আবার মানি প্ল্যান্টের শেকড় গাপ্পির রেচন-পদার্থ শুষে নিয়ে পানিকে দীর্ঘ সময় ধরে পরিষ্কার রাখবে।

সৌন্দর্য-বর্ধনের জন্য আমরা কিছু ছোট আকৃতির সাদা পাথর এক্যুরিয়ামের তলদেশে ছড়িয়ে দিতে পারি। পাথরের আরেকটি উপকারিতা হলো, মাছের রেচন-পদার্থ ওগুলোর ফাঁকে ফাঁকে আটকে যায়, তাই পানি তাড়াতাড়ি ঘোলা হয়ে যায় না।

ভেরি ইম্পরট্যান্ট! পানি ঘোলা হয়ে গেলে কিন্তু অবশ্যই পরিষ্কার পানি দিয়ে রিপ্লেস করতে হবে, নয়তো পানি মাছের জন্য বিষাক্ত হয়ে যাবে।

পাথরগুলোর আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাকে ‘অতি বৈজ্ঞানিক’ বলা যায়, আর তা হলো ক্যামোফ্লাজ এর বিষয়টি। ক্যামোফ্লাজ যেহেতু প্রাণিকুলের বেঁচে থাকার জন্য অতি আবশ্যক, সেক্ষেত্রে এই পাথরগুলো থাকার কারণে মাছগুলোর মনে হয় যে তারা ক্যামোফ্লাজ প্রয়োগ করতে পারছে, এজন্য তারাও প্রাণবন্ত থাকে। পাথরের ব্যাপারে শেষ উল্লেখযোগ্য বিষয়টি হলো– যেহেতু গাপ্পি মাছ মূলত ঝাঁকবদ্ধ হয়ে চলাচল করে, পাথরগুলো তাদেরকে সেরকম একটা অনুভূতি দেয়, তাই তারা স্বাচ্ছন্দ্যে বয়ামের ভেতর ঘুরাফেরা করতে পারে।

গাছের ব্যবহার

মাছ যদি রাখতে না চান তাহলে কিছু নির্দিষ্ট প্ল্যান্ট পানির জারে রেখেও মশা দূর করা যেতে পারে। সাইট্রোনেলা প্ল্যান্ট বিশেষ করে এজন্যই বিখ্যাত। এর কড়া গন্ধ মশারা অপছন্দ করে।

ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে আরেকটি সাজেশন দিতে চাই, আর তা হলো পার্পল হার্ট। এই মনোমুগ্ধকর বেগুনি বর্ণের ফুলগাছটি যেই পানিতে রাখা হয় সেই পানিতে আমি কোনো মশার লার্ভি চলাফেরা করতে দেখিনি।

উপসংহার

এই বয়াম-এক্যুরিয়াম তৈরির পদ্ধতিটি কোনো বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য যেহেতু ছড়াচ্ছে না সেহেতু এটি তো ট্রাই করাই যায়! পুনঃব্যবহারও করা হলো, গাছও লাগানো হলো, পরিবেশেরও কোনো ক্ষতি হলো না। তাহলে আজই বানিয়ে ফেলুন আপনার একান্ত নিজস্ব বয়াম-এক্যুরিয়ামটি! তারপর সেটিকে রেখে দিন ঘরের একটি লক্ষণীয় কোণায়, যেখানে পর্যাপ্ত আলোর দেখা মিলে।

add 1


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্যান্য লেখা সমূহ

আজকের দিন-তারিখ

  • মঙ্গলবার (রাত ১:০৮)
  • ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ১৩ রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬
  • ২ আশ্বিন, ১৪৩১ (শরৎকাল)
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Sundarban IT