দেশে বিনিয়োগ স্থবির, বিদ্যুৎ-জ্বালানি সংকটসহ নানা কারণে শিল্পাঞ্চলে অস্থিরতা, বাড়ছে বেকারত্ব, কমছে কর্মসংস্থান। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর নতুন বাংলাদেশ গঠনের যাত্রায় তরুণদের কর্মসংস্থানের চাহিদা থাকলেও উদ্যোক্তারা নানা সংকটে জর্জরিত। নতুন বিনিয়োগে আস্থা পাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা, নীতি সুদহার বাড়ায় ঋণের সুদও বাড়ছে।
উদ্যোক্তারা বলছেন, করোনা মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় উচ্চ মূল্যস্ফীতির বোঝা বহন করছে বাংলাদেশসহ অনেক দেশ। জ্বালানি সংকটে উৎপাদন ২৫-৪০ শতাংশ বন্ধ ছিল। ফলে ভারী শিল্প, পোশাক ও টেক্সটাইল খাত সংকটে, রপ্তানি প্রবৃদ্ধিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিগত সরকারের শেষ দিকে ব্যবসা স্থবির ছিল, নতুন সরকার আসার পর আশার আলো দেখলেও শিল্প-কারখানায় হামলা-মামলার কারণে ব্যবসায়ীরা হতাশ। এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে বিনিয়োগ প্রয়োজন, তবে বিনিয়োগের পরিবেশ নেই। ডিসিসিআই সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রাহমান নিরাপত্তা সংকটের কথা উল্লেখ করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি দাবি করেন।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি পরিস্থিতিতে ব্যবসা পরিচালন ব্যয় বেড়েছে, ব্যাংকঋণের সুদহার ১৫ শতাংশ ছাড়িয়েছে। ডলারের দর বেড়ে আমদানি ৩০ শতাংশ কমেছে, শিল্পে উৎপাদন সংকুচিত। উদ্যোক্তারা বলছেন, ভুল নীতির কারণে অনেকেই ঋণখেলাপি হয়েছেন; তাঁদের দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা দেওয়া প্রয়োজন, না হলে কর্মসংস্থানসহ অর্থনীতি স্থবির হয়ে যাবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক নীতি সুদহার বাড়িয়েছে ১০ শতাংশে। প্রথম দুই মাসে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি ৪৩.৭১ শতাংশ কমেছে। বৈশ্বিক সংকট ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় বিদায়ী অর্থবছরে শিল্প উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি অর্ধেকে নেমেছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো জানিয়েছে, চলতি অর্থবছরে শিল্পোৎপাদনের প্রবৃদ্ধি ৫.৩৪ শতাংশে নেমে এসেছে, যা কোভিড-১৯ পরবর্তী সর্বনিম্ন।