সেদিন গিয়েছিলাম আমার এক কলিগ জামান ভায়ের বাসায়। উনার সাথে একটু দরকার ছিল।তাদের ড্রয়িং রুমে বসলাম। এ কথা সে কথার পর হঠাত চোখ গেল একটা শো পিসের দিকে
আরে বাহ আপনার মাটির এই শো পিস টা তো দারুন। তা কোত্থেকে নিলেন?? জানতে চাইলাম
আর বলবেন না আপনার ভাবির চয়েস। এই দেখুন না ওয়াল ট্যাপেস্ট্রি আর ঝুলানো মাটির চাইম এটাও ওর চয়েস।
স্ত্রী গর্বে উপচে পড়ছে উনার গলা।
বাহ খুব সুন্দর। তা নিলেন কোত্থেকে??
কই আবার? বই মেলা।
বই মেলা? একটু অবাক হলাম। বই মেলায় কি এগুলাও পাওয়া যাচ্ছে নাকি??
আরে আপনি কি বই মেলায় যান নি?? ঢোকার মুখে দোয়েল চত্বর টা আছে না তার পাশ দিয়েই তো লাইন ধরে এসব শো পিসের দোকানগুলো। অখানে থেকেই নিলাম। ভাবি চায়ের ট্রে নিয়ে টি টেবিলে রাখতে রাখতে বললেন। ও আচ্ছা।
তা কবে গেলেন??
এই তো দুদিন আগে। আমার এক কলেজ বন্ধু বই বের করেছে। ও ই আমাদের যেতে বলল। আজকাল কি সব হয় না অই যে কি বলে মোড়ক উন্মোচন না কি যেন। সেই উপলক্ষেই গেছিলাম আমরা বাচ্চাদের নিয়ে।
বললেন জামান ভাই
ও আচ্ছা। তা বই টই কেমন দেখলেন??
আরে ধুর!! সব ভুষিমাল। এগুলা মাইনসে পড়ে? আর বই এর যা দাম!!!. বাপরে।
এত দাম দিয়ে বই কেনার মানেই হয় না। কন্ঠে বিরক্তি ঝরে পড়ছে জামান ভায়ের।
তো বাচ্চাদের বই টই কিনে দেন নি?
আরে ধুর? ওদের বই পড়ার সময় কই।সেই সকালে স্কুলে যায়। এর পর থাকে কোচিং। সেখান থেকে ফিরে বাসায় আসার পর আসে প্রাইভেট টিউটর। বই পড়ার সময় টা পায় কই বলেন তো ভাই?
বললেন ভাবি।
তাহলে বই মেলায় কি করলেন??
কি আবার? ফ্রেন্ডের বই এর মোড়ক উন্মোচনে ছবি তুল্লাম। দু চার টা স্টল ঘুরে সেলফি টেল্ফি নিয়ে এরপর সবাই চলে গেলাম ফুচকা খেতে। বাচ্চারা চিকেন ফ্রাই খেল মজা করে।
এর পর ফেরার পথে দোয়েল চত্বর থেকে আপনার ভাবি এসব কিনল নিজে পছন্দ করে। বই টই কিনে কি করব বলেন? বই। পড়ার সময় আছে নাকি।অফিসের কাজের যা চাপ।
হুম তাই তো। চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে বললাম আমি।
এবার ভাবি বললেন তাছাড়া দেখেন না ভাই বই তো ড়্রয়িং রুমে র্যাকে সাজিয়ে রেখেছি কিছু আর তো রাখারও জায়গা নাই। কি হবে অত অত বই রেখে বলেন খামকা জঞ্জাল বাড়িয়ে লাভ কি??
ভাবির প্রশ্নের কোন উত্তর আমার জানা নেই। এরপর আমরা অন্য আলাপে চলে গেলাম।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. আব্দুর রহমান
লেখা পাঠানোর ইমেইল: sahityapata24@gmail.com