সুনামধন্য গুণী শিল্পী ও লেখক ভূপেন হাজারিকা তার কোন একটা গানের কথায় বলেছেন...
মানুষ মানুষের জন্য,
জীবন জীবনের জন্য....
একটু সহানুভূতি কি...মানুষ পেতে পারে না?
হ্যাঁ, সত্যিই সহানুভূতি, দয়া, মায়া, মমতা, মানবিক মানবতা, বদন্যতা এসবের সমষ্টির পূর্ণতায় গঠিত হয় একজন পূর্ণাঙ্গ মানুষ। আর যে মানুষ তার থাকবে বিবেকবোধ।নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা থাকবে তার সকল রাগ বিদ্বেষ ক্রোধ। শক্তি ক্ষমতার অহংকারে অন্ধ হয়ে দাম্ভিকতার অপশক্তি প্রয়োগ করে যখন কোন মানুষ কোন নিরস্ত্র দুর্বলের উপর অমানবিক ভাবে আঘাত হানে। তখন তাকে জালেম বা জুলুমকারী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। কোন ভদ্র সুশীল সভ্য চৈতন্য পূর্ণ মানুষ জেনে বুঝে এটা করতে পারেনা। একমাত্র শক্তির অপব্যবহারকারী দাম্ভিক অহংকারী নির্বোধ কোন মানুষ ছাড়া। আর এটা যে করে, তখন তাকে আর মানুষ বলা যায় না। সে তখন একটা অমানুষে পরিণত হয়। আমরা কেউ চিরঞ্জীব বা অবিনশ্বর নই। সকলেই নশ্বর আর তাই আমাদের মৃত্যুটাও অবশ্যম্ভবী। কেউ চিরদিন স্থায়ী বেঁচে থাকবো না। কিন্তু আমরা আজ যেটা করে যাবো তা- ইতিহাস হয়ে এ বসুন্ধরায় যুগযুগ বলবৎ থাকবে। সেটা কারোর জন্য সৃষ্টি ধারায় ভালোবাসা হয়ে। আবার কারোর জন্য ঘৃণা হয়ে।
আর আমরা কেউ নিশ্চয়ই প্রবাহ কালের ইতিহাসের পাতায় পরবর্তী মানুষজনদের কাছে কোন ঘৃণার পাত্র হতে চাইনে। আর তাই আমাদের সকলের উচিৎ মানবিক মানবতার আর দয়ার্দ্রতা স্লোগানকে সামনে রেখে ধর্ম, বর্ণ, জাতি গোত্র নির্বিশেষে বিশ্বের সকল মানুষের উচিত মানুষ হিসেবে বিবেকের তাড়নায় ফিলিস্তিনের গাজার শিশুদের প্রাণ বাঁচাতে এগিয়ে আসা। আমরা প্রায় সকলেই কমবেশি এটা জানি হিন্দু সমাজে একটা প্রবাদ আছে আর সেটা হলো প্রতিটা শিশুরা হয় দেবতুল্য। আর মুসলিম সমাজে শিশুদের ফেরেস্তার সমান বলা হয় অর্থাৎ নিষ্পাপ। আমাদের সকলের প্রাণের কবি, দুঃখী কবি, প্রেম ভালোবাসা বিরহের কবি। প্রতিবাদী সংগ্রামী দ্রোহের কবি। সাম্যের কবি, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামও তার কবিতায় বলেছেন....
সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই।
আর আমি সবাইকে শুধু এতটুকুই বলতে চাই...
একই রক্তে মাংসে গড়া
আমরা সকলেই মানুষ ভাই,
এই মানুষে মানুষের মাঝে
কোন ভেদাভেদ ব্যবধান নাই।
হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রীস্টান যে যায় বলো তাই,
মূলত আমরা সকলেই মানুষ
আর আমরা মানুষ এটাই যে আমাদের পরিচয়।
হ্যাঁ ভাই, আর এই অসাম্প্রদায়িক সাম্যের চেতনাবোধকে মনে প্রাণে আঁকড়ে ধরে বিবেকবোধকে জাগ্রত করে আজ বিশ্বের সকল ধর্মের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। সাম্যের জয়ধ্বনি তুলে একই সুরে বলতে হবে। থামাও, থামাও যুদ্ধ আর যেনো গাজা ফিলিস্তিনে শিশুর প্রাণ না যায়। আর কোন যুদ্ধ নয় শান্তি...শান্তি চাই। আমি বিশ্বের জাতিসংঘের দায়িত্বরত সম্মানিত জ্ঞানী গুণী বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গজন এবং অন্য অন্য বিশ্বের সহৃদয় সকল ব্যক্তিকে আহ্বান করবো আসুন...আসুন না আমরা ধর্ম কিম্বা মসজিদুল আকসাকে ইস্যু না করে শুধু নিজেদের মানুষ ভেবে। ফিলিস্তিন গাজার ঐসব অবুঝ নিষ্পাপ দুধের শিশুদের মুখের দিকে অন্তত শুধু একবার মায়ার দৃষ্টি রেখে। তাদের জীবনের কথা চিন্তা করে সকলেই এই অন্যায় যুদ্ধ থামানোর জন্য এগিয়ে আসি। স্বজনপ্রীতির ভ্রাতৃত্বের মেলবন্ধনে ধর্মের জাতপাত ভুলে সকল দ্বন্দ্ব রেষারেষি ভুলে মনুষ্য মানবিক মানবতার বিবেকটাকে আরেকটি-
বার সকলেই জাগিয়ে তুলি। শিশুদের রক্ত আর তাদের স্বপ্নময়ী কচি জীবন নিয়ে ইজ্রায়েলের শাসক যে আগ্রসী তান্ডব চালিয়ে মরণ খেলায় মেতেছে। সেই যুদ্ধ নামের নিরস্ত্র মানুষের উপর অস্ত্রের প্রয়োগ বন্ধ করতে এই মৃত্যুর রক্তের হলি খেলাকে না বলি। দৃঢ়তার সাথে বিশ্বের সকলেই বলিষ্ঠ ঐক্য কন্ঠে একসাথে এক সুরে বলি, হে ইজ্রায়েলের সৈন্যরা আর যেনো কোন আগ্নেয়াস্ত্র প্রয়োগ না করা হয় আর যেনো কোন বুলেট বোমা না ছোড়া হয় ঐসব শিশুদের উপর আর যেনো অবুঝ অসহায় নিষ্পাপ শিশু না মরে এরপরও যদি কোন শিশুর প্রাণ যায়... তারজন্য বিশ্বের জাতিসংঘের আইন প্রয়োগের মাধ্যমে যুদ্ধ নামে এভাবে নির্বিচারে হাজার হাজার শিশুদের হত্যা করার মানবতা বিরোধী এমন জঘন্য ঘৃণিত অপরাধের জন্য বিচারের আওতায় এনে বিচার করে তোমাদের সর্ব থেকে সর্বোচ্চ কঠিন শাস্তি দেওয়া হবে। দেখবেন বিশ্বের জাতিসংঘ থেকে শুরু করে বিশ্বের সকল দেশ যখন এক হয়ে প্রস্তাব রাখবেন। তখন এমনিতেই যুদ্ধ বন্ধ করতে বাধ্য হবে ইজ্রায়েলের শাসকগোষ্ঠী। আর বেঁচে যাবে অসহায় অবুঝ হাজার হাজার শিশুরা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. আব্দুর রহমান
লেখা পাঠানোর ইমেইল: sahityapata24@gmail.com