পবিত্র রমজান বড়ই কল্যাণমণ্ডিত মাস, দোয়ার মাস। বছর ঘুরে আবারও ফিরে এসেছে রহমত, বরকত ও নাজাতের মাস। এই মাস প্রাপ্তি বিশাল সৌভাগ্যের ব্যাপার। মুসলিম বিশ্বে এ মাসের গুরুত্ব অপরিসীম। সৃষ্টিতে আমাদের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বিশেষ কিছু ইবাদত সকল উম্মতকেই দিয়েছেন। তারমধ্যে বিশেষ একটি হলো রোজা। এই মাসে যে কদরের রজনী আছে, সেই রাতকে আল্লাহ তাআলা হাজার মাসের চেয়ে উত্তম বলে ঘোষণা করেন। মুসলমানদের সংযম সাধনার মাস পবিত্র রমজান। ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম ফরজ ইবাদত হলো সিয়াম বা রোজা। দীর্ঘ ১১ মাসের প্রতীক্ষার পর রহমত, বরকত ও মাগফিরাতের সওগাত নিয়ে সারা বিশ্বে মুসলমানের কাছে সাম্য, সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি, ভ্রাতৃত্ব, মানবিকতা, ত্যাগ, সংযম ও আত্মশুদ্ধির মাস এই পবিত্র মাহে রমজান ফিরে আসে। রমজানের শিক্ষা হলো সব ধরনের পাপ কাজ থেকে বিরত থাকা এবং আত্মশুদ্ধি অর্জন করা। নিজের এবং অন্যের ওপর জুলুম করা, অপচয় করা থেকে বিরত থাকা। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলেও সত্য যে, পবিত্র রমজানে অনেকেই বেখেয়াল থাকেন। এছাড়া রোজার মাস এলেই দেখা যায় জিনিসপত্রের দাম হু হু করে বেড়ে যায়। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী এই মাসে বেশি মুনাফার আশায় দাম বাড়িয়ে নিজেদের স্বার্থ আদায়ে মরিয়া হয়ে ওঠে যা অত্যন্ত দুঃখজনক। রমজানের তাৎপর্য প্রত্যেকেরই গভীরভাবে উপলব্ধি করা এবং সেই মোতাবেক আমল করা প্রয়োজন। আমরা অনেকেই এই মাসের ইবাদত বন্দেগি থেকে গাফেল থাকি। অন্যান্য মাসের মতই এই পবিত্র মাসটিকে হেলায় কাটিয়ে দেই। আমরা যারা পবিত্র এই মাসটিকে লাভ করার তৌফিক লাভ করছি তারা অবশ্যই সৌভাগ্যবান। অনেকেই হয়তো আশায় ছিলেন কিন্তু লাভ করতে পারেননি, না ফেরার দেশে চলে গেছেন। তাই আমাদেরকে এ মাসের পুরো ফায়দা অর্জন করতে হবে। মনে রাখতে হবে, সিয়াম সাধনার শিক্ষা জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিজেকে পরিশুদ্ধ করতে হবে এবং এর মাধ্যমে অর্জিত শিক্ষা জীবনে প্রতিফলিত করতে হবে। তবেই ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক পরিমন্ডলে শান্তিশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হবে। আমরা রোজা রাখলাম কিন্তু আমার প্রতিবেশীগুলি কষ্টে রোজা রাখতে পারছে না তাহলে আমাদের সামাজিক দায়িত্ব পালন প্রশ্নবিদ্ধ থেকে গেলো। রোজা রাখার পাশাপাশি আমাদের সাধ্য অনুযায়ী আমরা আমাদের প্রতিবেশী, গরীব, অন্নহীন, বস্ত্রহীন লোকদের সাহায্য করে উঁচুনিচুর বৈষম্য দূর করে এ মাসের মান রক্ষা করতে সচেষ্ট হতে হবে।