মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। ঈদ মানেই আনন্দ। ঈদ মানেই খুশি। ঈদ উপলক্ষ্যে নারীর টানে লাখ লাখ মানুষ শহর থেকে গ্রামের উদ্দেশে রওনা দেয়। কেউ লঞ্চে, কেউ গাড়িতে, কেউ ট্রেনে। সারা বছর শহরে তথা পরিবারের বাইরে থাকায় ঈদ উপলক্ষ্যে কর্মজীবী মানুষ চায় পরিবার-পরিজন সঙ্গে নিয়ে নিশ্চিন্তে কিছু সময় কাটাতে। ঈদের আনন্দ আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য বিপুলসংখ্যক কর্মজীবী মানুষ ঢাকাসহ অন্যান্য বড় শহর থেকে পরিবার-পরিজনসহ গ্রামের বাড়িতে যান। কিন্তু নিরাপদে বাড়ি ফেরার কোনো নিশ্চয়তা পাওয়া যায় না। রমজান মাসেই বাড়ির উদ্দেশ্যে পা বাড়ান তারা। আর তাতেই নানা ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হয়। ঈদের আনন্দই যেন মাটি হয়ে যায়। দুর্ঘটনায় বয়ে আনে কান্না। বাস কোম্পানিগুলোর প্রধান উদ্দেশ্য থাকে দ্রুততার সঙ্গে যাত্রী আনা-নেওয়া করা। এক কোম্পানি আরেক কোম্পানির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রধান সড়কগুলোতে প্রতিনিয়ত গাড়ি চালিয়ে থাকে, যার ফলে রাস্তায় হুটহাট করেই মানবসৃষ্ট এই কৃত্রিম দুর্ঘটনা ঘটে। ঈদ পূর্ববর্তী সময়ে সড়ক দুর্ঘটনা আমাদের প্রতি বছরের নিয়মিত ঘটনা। এর বাইরেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেকে বাস বা ট্রেনের ছাদে যাতায়াত করেন। কখনো কখনো অতিরিক্ত গতি ও ফিটনেসের অভাবে সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয়। সড়ক দুর্ঘটনা আমাদের দেশে নতুন কিছু নয়। তাই যাত্রাপথে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে, যাতে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে। অন্যদিকে দেখা যায়, লঞ্চ কোম্পানিগুলো তাদের ত্রুটিযুক্ত লঞ্চ রংচং মাখিয়ে চালানো শুরু করে দেয়। এক জনের যায়গায় ছয় জন ওঠানো হয় লঞ্চে। এমন কোনো যায়গা নেই, যেখানে যাত্রী থাকে না। ফলস্বরূপ, কখনো কখনো পথিমধ্যে ঘটে যায় নানান অনাকাঙ্খিত ঘটনা। ঈদের সময় বিভিন্ন চক্র, ছিনতাইকারী, মলম পার্টি ও গামছা পার্টির আবির্ভাব হয়। তাদের উদ্দেশ্যই হচ্ছে মানুষকে বিপদে ফেলা। বিশেষ করে মলম পার্টি ও ছিনতাইকারী। ঈদের সময় এলেই তাদের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়। খাবারের মধ্যে নেশাজাতীয় বা চেতনানাশক দ্রব্য মিশিয়ে মানুষকে অজ্ঞান করে অর্থ, ফোন, প্রয়োজনীয় মালামাল হাতিয়ে নেয়। তাই সাধারণ মানুষকে এদের থেকে অনেক বেশি সচেতন থাকতে হবে। আবার অনেক চক্র আছে যারা জাল টিকিট বিক্রি করে, ভালো সিটের কথা বলে অনেক টাকা নেয় কিন্তু শেষে উঠিয়ে দেয় লক্কড়ঝক্কড় পরিবহনে। তাই এসব প্রতারণা থেকে সাবধান থাকতে হবে। যাত্রাপথে অপরিচিত কারও দেওয়া খাবার বা পানাহার থেকে বিরত থাকতে হবে। প্রসাশনের এই সময়ে সতর্ক থাকা একান্ত জরুরি। গুরুত্বপূর্ণ ও অনিরাপদ যায়গাগুলোতে তাদের লোকবল রাখতে হবে। যে কোনো সমস্যা যে কোনো মুহূর্তে তাদের জানানোর জন্য বিভিন্ন হেল্পলাইন খুলতে হবে। তাহলেই নিরাপদ ও আনন্দদায়ক হবে সকলের ঈদযাত্রা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. আব্দুর রহমান
লেখা পাঠানোর ইমেইল: sahityapata24@gmail.com