“আমাদের চারপাশে বহিঃ বিশ্বের দিকে আমরা যদি একটু সজাগ দৃষ্টিপাত করি। তাহলে দেখতে পাবো ধর্মন্ধত্বই মূলত শান্তিময় এ বিশ্বের মানব সমাজে যতো অশান্তি আর কোন্দল সৃষ্টির মূল কারণ। আজ আমরা যতো দ্বন্ধ-ফ্যাসাদ, রক্তক্ষয়ী সংঘাত, দাঙ্গাহাঙ্গামা, রক্তপাত, মারামারি, কাটাকাটিতে লিপ্ত হয়। তার বেশিরভাগই কারণ হলো যে যার নিজনিজ ধর্মের প্রতি গোঁড়ামি আর অন্ধত্বের জন্য। সত্যি বলতে আমরা কেউ এক ধর্মের মানুষ অন্য ধর্মের মানুষকে সৈহ্য করতে পারিনে। সৈহ্য করতে পারিনে অন্য ধর্মের কোন কার্য বিধি-নিষেধ ধর্ম পালন করাকে। যেটা মূর্খামী ছাড়া আর কিছু নয়। বিশ্বে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খৃষ্টান আরো জানা-অজানা যতো রকম ধর্মের মানুষ আছে। তারা যে যার মত নিজনিজ ধর্ম মতে তাদের প্রভুর আনুগত্য করবে। ধর্মের অনুসরণ অনুকরণ করবে এটাই তো স্বাভাবিক। তারজন্য বিপরীত ধর্মের মানুষ কেনো চোখের বালি, চক্ষুশূল ভাববে। এটা কোন ভাবেই আমার বোধগম্যে আসেনা।
আমি বলি কি, আরে ভাই করুক না যে যার মত নিজের ধর্ম পালন। তাতে তোমার আমার অসুবিধে কোথায়? তারা তো আর তোমার বাড়া ভাতে ছাই দিচ্ছেনা। কিম্বা বিপরীত ধর্মের কোন মানুষ তোমার আমার কারোর পাকাধানে মইও দিচ্ছেনা।কিম্বা কোলের ভাত কেড়েও খাচ্ছে না।
তাহলে…আমি বুঝিনে বাবা, কেনো তাহলে ভিন্ন বিপরীত রীতিনীতি মতাদর্শের ধর্মের কোন মানুষ আমার চোখের বালি কিম্বা চক্ষুশূল হবে?
“তোমার ধর্ম মতে তোমার কাছে যেটা পাপ
অন্য ধর্ম মতে সে ধর্মের মানুষের কাছে সেটাই পূর্ণ
এতে কারোর আঁতে আঘাত লাগার তো কিছু
দেখিনা।
আজ ফকির লালনের গানের কথা নিয়ে সারাটা
বিশ্বে গবেষণা করে। কই! কাউকে তো বিদ্রুপ
আচারণ করতে দেখিনে।
ফকির লালন তার কোন একটা গানে বলেছেন
“এই দেশেতে পাপ যাহা
অন্য দেশে পূর্ণ তাহা”
হিসাব করলে পাপ পূর্ণের নাই বালাই।
আবার আমরা যদি একটু আপনি আমি আমাদের পারিপার্শ্বিকতার দিকে খেয়াল করি দেখতে পাবো….
আপনার এলাকায় আপনার ভাষায় যেটা গালি”
আমার এলাকায় সেই গালিটাই মুখের বুলি।
তাহলে এবার ভাবুন?
কেনো যে আমরা সব মানুষ হয়ে মানুষ মানুষের সাথে দ্বন্দ্ব বাঁধায় খালিখালি?
আমি এজন্য কথা গুলো বলছি যে, আজ বিশ্বের দিকে নজর দিলে দেখতে পাবো ভারত চীনের উইঘুর, ফিলিস্তিনসহ পৃথিবীর প্রায় অনেক দেশে মুসলিম হওয়ার কারণে তাদের নির্যাতন করা হয়।
অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলতে হয়। আমাদের প্রতি
রাষ্ট্র ভারতে যেখানে কয়েকশো কোটি মুসলমান।সেখানে প্রতিনিয়ত মসজিদে নামাজ পড়া। গরু জবেহ, কুরবানি করার জন্য মুসলমান ভাইদের হিন্দু ভাইদের হাতে নির্যাতন নিপীড়ন সৈহ্য করতে হয়। ইবাদতের পবিত্র ঘর মসজিদ ভেঙ্গে দেওয়া
হয়। এমনকি অনেকের জীবনও চলে যায়। আর মামলামকদ্দমা জেল জরিমানা এসব তো হরহামেশাই হয়েই থাকে।
আবার কোনকোন রাষ্ট্রে অন্য ধর্মের অনুসারীরা
কুরআনের উপর ওঠে দাঁড়ায়। কুরআনে লাথি মারে। পবিত্র কুরআনের পাাতা ছিঁড়ে ফেলে মল-
মূত্রের মধ্যে ফ্যালে।শুধু তাই, কুরআন অবমাননা সহ আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে নিয়ে
নানান রকম ব্যঙ্গ কটুক্তি করে।
কই! আমার বাংলাদেশে তো কোন হিন্দু বৌদ্ধ বা খৃষ্টান কিম্বা অন্য ধর্মের ভাই বোনদের পূজা করা কিম্বা পাঠা, শুয়োর বলি দেওয়ার জন্য কোন মুসলিম ভাইয়েরা তো তাদের নির্যাতন করেনা।
আমরা সব ধর্মের মানুষ তো আমাদের দেশে সবাই মিলেমিশে এক সমাজে বসবাস করি। ধর্ম
পালন নিয়ে কোন ধর্মের মানুষের সাথে কোন ধর্মের মানুষের কোন রূপ আক্রোশ মনোভাব কিম্বা কোন বৈরীতা নেই।
আমি কোন ধর্মের পক্ষ না নিয়ে তাই বলছি ভাই…
তোমার ধর্মের রেওয়াজ তুমি পালন করো।
যা মন চাই, খাসি, বকরী, পাঠা, দুম্বা, উট, ভেড়া বলি কিম্বা কুরবানি দাও। যার যার দেবতা কিম্বা প্রভুর খুশির জন্য।
হিন্দু বা অন্য ধর্মে তোমার কাছে যেমন পাঠা বলি পূর্ণের। মুসলিমদের কাছেও তেমন গরু কুরবানি
মহা সওয়াবের। কেননা→এই মানুষের জন্য সৃষ্টির সবকিছুই স্রষ্টা সৃষ্টি করেছেন।
সবশেষে আমি একটা কথা বলে শেষ করতে চাই
“কুকর্ম যতো অধর্ম ভাই
করোনা কেউ তাই ধর্মের বড়াই
শুধু ধর্মে নয়, সৎ কর্ম গুণে হউক
আমাদের মানুষ পরিচয়।