দীর্ঘ সাড়ে তিন মাস বন্ধ থাকার পর আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পুনরায় ক্লাস শুরু হচ্ছে। ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন ছুটির কারণে জুন মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম বন্ধ ছিল। তবে সেই ছুটির পর থেকে একের পর এক সংকটে জর্জরিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় অচল অবস্থায় পড়ে। শিক্ষকদের আন্দোলন, শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন, এবং রাজনৈতিক পট পরিবর্তন—এই সব মিলিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ স্থবির হয়ে যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও এই সময়কালে প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি ঘোষণা করেছিলেন, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক শিক্ষাকার্যক্রমকে সম্পূর্ণরূপে ব্যাহত করে। অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কারের দাবিতে ক্লাস বর্জন করেন, যা আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।
এই অচলাবস্থার মধ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতা নতুন মাত্রা যোগ করে। শেখ হাসিনার সরকারের পতন এবং নতুন নেতৃত্বের আবির্ভাবের পর পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে। নতুন উপাচার্য নিয়োগ, সিন্ডিকেট সভা এবং জরুরি সিদ্ধান্তের মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত ক্লাস চালুর সিদ্ধান্ত হয়।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো একটি জাতির ভবিষ্যতের ভিত্তি। শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ সময় ধরে শিক্ষার বাইরে রাখা মানে তাদের ভবিষ্যতের ক্ষতি করা। যদিও রাজনৈতিক অস্থিরতা ও আন্দোলনের প্রভাব দেশের প্রেক্ষাপটে নতুন নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা দ্রুত সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের আরও সক্রিয় এবং সুপরিকল্পিত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ছিল।
শিক্ষার্থীরা এখন দ্রুত শিক্ষার ধারায় ফিরতে চায়। তাদের জীবন ও ক্যারিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ সময় এই সংকটে হারিয়ে গেছে। তাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এখন এমন একটি সুষ্ঠু ও স্থিতিশীল পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে, যাতে শিক্ষার্থীরা নিশ্চিন্তে তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে এবং নতুন সংকট আর না সৃষ্টি হয়।
শিক্ষা এবং শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষা করা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষকদের প্রধান দায়িত্ব। ভবিষ্যতে এ ধরনের অচলাবস্থা যেন আর না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সবার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া জরুরি।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. আব্দুর রহমান
লেখা পাঠানোর ইমেইল: sahityapata24@gmail.com