ফেসবুকের মাধ্যমে জুয়েলের সাথে মারুফার পরিচয়। পরিচয় থেকেই দু’জনের মধ্যে বন্ধুত্বের সৃষ্টি। এভাবেই চলতে থাকে কয়েক মাস পর্যন্ত। এরপর দু’জনে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে যায়। বিশেষ করে জুয়েলের প্রতি মারুফা প্রবল দুর্বল হয়ে পড়ে৷ বগুড়া শহরে মারুফার বেড়ে উঠা। অপর দিকে টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় জুয়েলের বসবাস। কিন্তু এই দূরত্ব তাদের মাঝে কোনো বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়নি। খুব ভালো ভাবেই তারা একে অপরের কাছাকাছি আসে। মারুফার নির্ভেজাল ভালোবাসা পেয়ে জুয়েল অনেক মুগ্ধ। একদিন ফোনে কথা না হলে দু’জনেই মন খারাপ করে। যদিও কোনোদিন তাদের দেখা হয়নি। কিন্তু ভীষণ মায়ায় তারা জড়িয়ে পড়েছে একে অপরের প্রতি। মারুফার হাসিটা ভীষণ মায়াবী। সৌন্দর্যের কোনো তুলনা নেই। দীঘল চুলে হালকা পাতলা গড়নে অসম্ভব সুন্দর লাগে মারুফাকে। জুয়েলকে মারুফা অত্যধিক ভালোবাসে। জুয়েলের প্রতিটি কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করে মারুফা। মারুফা চায় জুয়েলকে বিয়ে করে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে। কিন্তু জুয়েল এখনি বিয়ে করতে রাজি নয়। তবে জুয়েলও মারুফাকে অনেক বেশি ভালোবাসে। জুয়েল চায় নিজে প্রতিষ্ঠিত হয়ে তারপর মারুফাকে বিয়ে করবে। ইতোমধ্যে মারুফার বাসার লোকজন জেনে গেছে জুয়েলের সাথে তার প্রেমের সম্পর্কের কথা। কিন্তু তাতে কোনো সমস্যা হয়নি তাদের সম্পর্কের মাঝে। বাসার সবাই রাজি আছে জুয়েলের সাথে মারুফাকে বিয়ে দিতে৷ সমস্যা শুধু জুয়েলের। কিন্তু মারুফাকে জুয়েল কথা দিয়েছে প্রতিষ্ঠিত হয়ে মারুফাকেই সে বিয়ে করবে। এমনিতে মারুফা মেয়েটা অনেক ভালো। আচার আচরণে অনেক আন্তরিক। বলতে গেলে আপাদমস্তক ভালোবাসা প্রবণ একজন মানুষ। ভূষণে আধুনিক, স্বভাবে নম্র। সুন্দরের দিক থেকেও সাক্ষাৎ পরী যেন ! মনে হয় পৃথিবীর সবটুকু সুন্দরের সংমিশ্রণে বিধাতা তাকে সৃষ্টি করেছেন হাজার বছর সময় নিয়ে। এমন একটা মানুষের সান্নিধ্য পেয়ে জুয়েল সত্যিই অনেক সৌভাগ্যবান। মারুফার হৃদয়ের সবটুকু ভালোবাসা দিয়ে জড়িয়ে রেখেছে জুয়েলের চারপাশ। সারাজীবন মায়ার বাঁধনে মারুফা জুয়েলকে বেঁধে রাখতে চায়। পাশাপাশি থেকে জুয়েলের স্বপ্ন পূরণে মারুফা চলতি পথের সারথি হয়েও থাকতে চায় হাজার বছর। জুয়েলও চায় মারুফার সাথে অসংখ্য জীবন একসাথে পার করতে। কোনোদিন হারাতে চায় না প্রিয় ভালোবাসার মানুষটাকে। ধরে রাখতে চায় হৃদয়ের বাঁধনে অনেক বেশি ভালোবাসার সমন্বয়ে। কেউ কাউকে ছাড়া এক মুহূর্তও যেন থাকতে পারে না। সবসময় হোয়াটসঅ্যাপ এবং ম্যাসেঞ্জারে তাদের চ্যাটিং করে সময় কাটে। মাঝেমাঝে ভিডিও ফোনেও তারা বিনিময় করে ভালোবাসার কথা। তখন উড়ন্ত ভালোবাসা দুরন্ত ঝড়ের মতো রেখাপাত করে দু’জনের মনের ভিতর। কখনো কখনো তারা স্বামী-স্ত্রীর মতো পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে যায় কল্পনার মাঝখানে। মারুফা চায় জুয়েলের মনের সবটুকু ভালোবাসা গায়ে মেখে পবিত্র হতে। এতোকিছুর পরেও মাঝেমাঝে তাদের মাঝে তুমুল ঝগড়া হয়। তখন মনে হয় এই বুঝি তারা চিরতরে আলাদা হয়ে গেলো। কিন্তু পরক্ষণেই তাদের সেই রাগ-অভিমান পানি হয়ে যায়। এমন দুষ্ট-মিষ্ট ভালোবাসায় তারা জড়িয়ে আছে মায়ার বাঁধনে। সম্পর্কের অনেক গভীরে তাদের ভালোবাসার অবস্থান। তাইতো কেউ কাউকে ছাড়া এক মুহূর্তের জন্যও থাকতে পারে না৷ একটু বিচ্ছেদ হলেই আরো যেন কাছে পাওয়ার তৃষ্ণা বেড়ে যায় দু’জনের মনে। ভালোবাসাটা তাদের আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে। যা কখনোই ম্লান হবার নয়। বরং স্বর্গীয় ভালোবাসা তাদের মাঝে প্রতি মুহূর্তে নব আলোর ঝলকানিতে জ্বেলে উঠে আলোর প্রদীপ। সেই আলোর প্রদীপে একদিন তাদের স্বর্গীয় বাসর হবে স্বয়ং বিধাতার অনুমতিক্রমে। সবকিছু ম্লান হলেও তাদের ভালোবাসা অনন্তকালের জন্য অম্লান হয়ে রবে পৃথিবীর বুক জুড়ে। যা অনন্ত সুখের ক্রমধারায় ভাসিয়ে নিয়ে যাবে সাত সমুদ্র- তেরো নদীর ওপার স্বর্গ-মর্ত্য ছাড়িয়ে। এমনি তাদের পবিত্র ভালোবাসার দৌরাত্ম্য। যা যুগে যুগে আলো ছড়াবে সম্মুখ থেকে সম্মুখে অন্ধকার পথে। প্রবল ভালোবাসায় তখন ইচ্ছে হবে জুয়েলের বুকে মারুফার হারিয়ে যেতে। যে হারিয়ে যাওয়ার মাঝে কোনো সীমা-পরিসীমা থাকবে না। কেউ জানবে কে কাকে বেশি ভালোবাসে ! কেউ জানবে না হারিয়ে যাওয়ার রহস্যটাই বা কি ! ভালোবাসা তখন তাদের বোধশক্তি একদম অবুঝ শিশুর মতো বানিয়ে দিবে। যেখান থেকে জন্ম হবে তাদের ভালোবাসার প্রথম রহস্যের চাবিকাঠি৷ যা খুলে দিবে অনাগত পৃথিবীর দরজা। সেই দরজা দিয়েই মারুফা অচেতন মনে হেঁটে যাবে দুরন্ত ভালোবাসার তৃষ্ণা নিবারণে। পাশে থাকা জুয়েলও তখন হামাগুড়ি দিবে মারুফার বুকের পাঁজর স্পর্শ করে৷ সেখানেই তারা মিলিত হবে প্রথম প্রেমের রসবোধ আস্বাদন করতে। যা শেষ হবে না কোনো কালে কোনোদিন। এই প্রেম চির অমর, চির অক্ষত !