ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে- “A man without an aim is like a ship without a rudder.” অর্থাৎ “লক্ষ্যহীন একজন মানুষ হালবিহীন একটা জাহাজের ন্যায়।” শিক্ষার প্রাথমিক স্তরের কোনো ছাত্র/ছাত্রীকে জীবনের লক্ষ্য বা ভবিষ্যতে কী হতে চায়, তা জিজ্ঞেস করলে অধিকাংশরাই ‘ডাক্তার’ হবে উত্তর দেয়।
ডাক্তার হতে হলে এসএসসি/সমমান এবং এইচএসসি/সমমানে অবশ্যই বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশুনা করতে হয়। আর উভয় পরীক্ষায়ই কঠোর অধ্যবসায়ের মাধ্যমে ভালো ফলাফল আবশ্যক এবং সঙ্গে প্রভুর দয়া। ডাক্তার হওয়ার জন্য এইচএসসি/সমমান পরীক্ষায় পাস করার পর অংশগ্রহণ করতে হয় মেডিকেলের ভর্তিযুদ্ধে। সংগৃহীত তথ্যমতে, ২০২৩-২০২৪ ইং শিক্ষাবর্ষের জন্য মোট ১ লাখ ৪ হাজার ৩৭৪ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেন এবং ৯৮ শতাংশ শিক্ষার্থী এমবিবিএস/মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি আমাদের দেশের মোট ৩৭ টি সরকারি মেডিকেল কলেজে মেধা, মুক্তিযোদ্ধা ও সংরক্ষিত আসনের জন্য সর্বমোট ৫৩৮০ জনকে নির্বাচিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ফলাফল প্রকাশ করেন। মাত্র ৫.২৫% (প্রায়) শিক্ষার্থী সরকারিভাবে ডাক্তারী পড়ার জন্য চান্স পান। কঠোর সাধনা ও অধ্যবসায় থাকা সত্ত্বেও সরকারি মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ মেলেনি ৯৪.৭৫% শিক্ষার্থীর কপালে। কথায় আছে,”ভাগ্যের লিখন না যায় খণ্ডন।” ফলে অনেকের জীবনের লক্ষ্য কালের প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন দিকে বিচরণ শেষে এক সময় হয়তো গন্তব্যে পৌঁছে কিংবা অতল গহ্বরে হারিয়ে যায়। এভাবে একজন আশাহত মানুষও অজানা কোনো আশাকে বুকে লালন করে জীবনের অতৃপ্ত সুখ পাখিকে খুঁজে বেড়ায়। অন্যান্য ব্যতিক্রমী কিংবা জীবনের লক্ষ্য নিয়ে চেতনাহীন মানুষের কথা না হয় না-ই বললাম।
এটা তো গেল আমাদের পার্থিব জীবনগাঁথা যা অনেক সময় খুবই নির্মম হয়। আমাদের পারলৌকিক জীবনের লক্ষ্যে কিন্তু বিচিত্রতা নেই। সবার লক্ষ্য কেবল একটাই, আর তা হলো স্বর্গ লাভ করা। আমরা স্বর্গ চাই ঠিকই, আমাদের পার্থিব জীবনে চারিদিকে অশুভ ছায়ার ফাঁদের কারণে জীবনের মূল লক্ষ্য পূরণের জন্য গৃহীত পদক্ষেপ/পরিকল্পনা অনেক সময় বাঁধাগ্রস্ত হয়। এসব অকল্যাণকর বাঁধাকে টপকানোর একমাত্র ভরসা মহান বিধাতা।
যা হোক, পরকালীন অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে সময় থাকতেই আমাদের অতীতের সমস্ত ভুল-ত্রুটির জন্য যত দ্রুত সম্ভব প্রভুর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা জরুরী। মহান প্রভু, পরকালে স্বর্গ লাভের নিমিত্তে আমাদের জীবনের এই প্রধান লক্ষ্য বাস্তবায়নে পার্থিব পাপাচার থেকে রক্ষা করার জন্য তোমার দয়ার কাঙাল আমরা।