মাথায় চকচকে তেল চুল করে কলেজে আসা ছেলেটার নাম সাকিব যাকে কলেজের কমবেশি সবাই চেনেন ভালো ছাত্র। তবে তার পোশাক আশাক এই যুগের ছেলেদের মত না অনেকেই তাকে চেনেন আবার অনেকে চেনেন না কারণ সে সময় মত কলেজে আসে আবার চলে যায় টিফিনের মাঝখানে যে সময় টুকু পায় সে সময় বাদে সবসময় বই নিয়ে বসে থাকে, বন্ধুবান্ধব এর আডডায় তাকে তেমন একটা দেখা যায়না ছেলে বন্ধু তেমন নেই, মেয়েদের তো ধারে কাছ দিয়ে নেই , সাকিব এবার এইচএসসি পরীক্ষা দেবে তার মায়ের অনেক স্বপ্ন তার ছেলে ডাঃ হবে গ্রামের মানুষের বিনা পয়সায় চিকিৎসা করবেন গরিব ও অসহায় মানুষের।
এদিকে সাকিব ভালো ভাবেই পড়াশোনা করতেছেন পরিক্ষার বাকি আর ২ মাস অন্যদিকে সে তার এক বন্ধুর কাছে থেকে জানতে পারে ফেসবুকে অনেক ভালো সাজেশন পাওয়া যায় তাই সাকিব ঠিক করলো সে একটা ফোন ব্যবহার করবে ফেসবুক চালাবে , সে তার মাকে গিয়ে বললো ফোন দিয়ে লেখাপড়া করা যায় তার মা অনেক কষ্ট করে ফোন কিনে দেয় কারণ ফোন দিয়ে ছেলে লেখাপড়া করবে ফোন নিয়ে পড়ের দিন সাকিব কলেজে যায় এক বন্ধুকে বলে ফেসবুক আইডি খুলে দিতে সে একটা আইডি খুলে দেয় আর ভালো ভালো সাজেশন গুরুপে লাইক দিয়ে দেয় এবং কিছু অনন্যা গ্রুপেও লাইক দিয়ে দেয় কারণ সাকিব আশা পাশের বিষয়ে কিছু জানতে পারে এভাবে অনেক দিন চলে, একদিন সাকিব নিজেই ভাবলো আমি একটা সাজেশন পোস্ট করবো পোস্ট করলো পরের দিন ফেসবুকে ডুকে দেখে অনেক লাইক কমেন্ট এটা দেখে সাকিব খুশি হয় তারপর কলেজে চলে যায় কলেজ থেকে এসে দেখে একটা মেয়ে তাকে অনেক গুলো মেসেজ দিয়েছে , কিছু মেসেজ এমন ছিল যে ভাইয়া আপনি অনেক ট্যালেন্ট আপনি যে সাজেশনগুলো শেয়ার করেছেন তা আমার জন্য অনেক উপকার হয়েছে পরিক্ষায় সেটা ৯৫% কমন পরেছে, সাকিব এটা শুনে অনেক খুশি হয়ে বলে আমি জানতাম না আমার পোস্ট টা কারো জন্য এত উপকারী হবে, মেয়েটা বলে আপনি অনেক ট্যালেন্ট একটা লোক আমি কি আপনার বন্ধু হতে পারি, সাকিব হা একটি রিয়েকট দেয় মেয়েটি বলে হাসছেন কেনো আমি কি আপনার বন্ধু হবার যোগ্যতা রাখি না সাকিব বললো আরে না এটা না জীবনে কখনো কোনো মেয়ে আমাকে বলে নি যে আমার বন্ধু হতে চায় তাই হাসলাম আর কি তখন মেয়েটি বললো কি বলেন আপনি একজন টেলেন্টেড লোক আপনার কোনো মেয়ে বন্ধু নেই এটা কি মানা যায় এভাবেই কথা বলতে বলতে রাত ১১ টা বেজে যায় সেদিন সাকিব তাকে বায় বলে পড়তে বসে কিন্তু পড়া তেমন একটা হয় না ওই মেয়েটা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে । পরের দিন সাকিব খুব খুশি কারণ তার এখন একটা মেয়ে বন্ধু আছে এভাবেই তাদের রংবেরং এর কথা চলতে থাকে যে সাকিব কলেজের প্রথম বেঞ্চে বসতো সেই সাকিব এখন লাস্টে গিয়ে বসেন কারণ মেয়েটা তাকে একটু পর পর মেসেজ দেয় তাই রিপ্লাই দিতে হয় অনেকেরই এটা নজর পড়ে যায় শিক্ষকদের ও নজর কিন্তু কেউ কিছু বলে না কারণ সে ভালো ছাত্র তাই তার এমন পরিবর্তন তার বন্ধু ছিদ্দিক বলে তুই ভালো একটা ছাত্র তুই যেমটা করছোস তেমন টা ঠিক নয়, অপরিচিত একটা মেয়ের সাথে কথা বলে যে সময় টা নষ্ট করছিস এই সময় টা নষ্ট করা তোর জন্য মোটেও ঠিক নয় কারণ সামনে আমাদের পরিক্ষা আর তোর মায়ের তোকে নিয়ে কত স্বপ্ন তোর বাবা মা অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করায় এই জিনিস টা মাথায় রাখিস। তখন সাকিব বলে আমার টা নিয়ে তোকে ভাবতে হবে না তুই তোর টা নিয়ে ভাব ছিদ্দিক তখন সেখান থেকে চলে আসে আর মন খারাপ করে , সামান্য একটা মেয়ের জন্য ও যেই কাজটা করছে তা মোটেও ঠিক নয় কারণ ছিদ্দিক এই মেয়েদের সম্পর্কে আগে থেকেই জানে তাদের ক্লাসমেট হলেও সে এই বিষয়ে অনেক আগেই পেকে গেছে এই অভিজ্ঞতা অনেক আগেই নিয়ে নিয়েছে তারপর সে এগুলো ছেড়ে দিয়ে লেখাপড়ায় মন দিয়েছে সে জেনে গেছে এইসব এর মধ্যে কিছু নেই যে সাকিব পরিক্ষার আগে দিন রাত পড়াশোনা করতো আর সেই সাকিব এখন দিনরাত মেয়েটার সাথে চ্যাট করে লেখাপড়ার মধ্যে তার কোনো মন নেই পরিক্ষার আগের দিন রাত মেয়েটার সাথে সারারাত কথা বলে আর কোনো প্রস্তুতি ছাড়াই পরিক্ষা দিতে গেলো পরিক্ষার হলে গিয়ে ছিদ্দিক কে ডাক দিয়ে বলতেছে ভাই দেখ তো আজকে প্রশ্ন এত কঠিন হয়েছে ছিদ্দিক তখন মনে মনে ভাবতেছে প্রশ্ন আজকে কঠিন হয়নি তুই এই পরিক্ষায় প্রস্তুতি নেসনি তুই সময় নষ্ট করেছিস ওই মেয়েটার পেছনে তারপর তাদের পরিক্ষা এভাবেই শেষ হয়ে গেলো সাকিব সারাদিন রাত মেয়েটার সাথে ই কথা বলে যেদিন রেজাল্ট দিবে সাকিব এর মা অনেক কষ্ট করে টাকা জোগাড় করলো গ্রাম বাসি কে মিষ্টি খাওয়াবে কারণ তার ছেলে ভালো রেজাল্ট করবে কারণ আগে থেকেই সে ভালো রেজাল্ট করে আসছে । রেজাল্ট এর দিন সাকিব কলেজে গেলো গিয়ে দেখলো রেজাল্ট এর সিটে তার নাম নেই অনেক খোঁজাখুঁজির পর ও পেলো না ছিদ্দিক কে বললো ছিদ্দিক ও দেখলো তারপর অবশেষে জানতে পারলো সে ফেল করেছে তাও আবার তিন বিষয় এটা দেখে তার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো তখন সে বাড়িতে গেলো তার মাকে বললো মা আমি পাশ করতে পারি নি আমি তোমার স্বপ্ন পুরন করতে পারি নি তখন তার মা অজ্ঞান হয়ে গেল তারপর পানি দিয়ে সুস্থ হলো, তারপর তার মা যখন ঘুমিয়ে পড়লো তখন সাকিব ফেসবুকে ডুকলো ডুকে মেয়েটাকে মেসেজ দিলো কেমন আছো কি করো আর মেয়েটি রিপ্লাই দিলো এই তো বয়ফ্রেন্ড এর সাথে কথা বলতেছি, এই কথা শোনার পর সাকিব এর মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো সাকিব তখন বললো তোমার বয়ফ্রেন্ড আছে আগে তো বলো নি মেয়েটা তখন বললো আগে ছিল না আজকেই বানিয়েছি তুমি তো ফেল করেছো ফেল করা ছাত্রর সাথে আমার কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে না তারপর সাকিব তার সাথে আর কথা বলতে পারলো না কারণ সেদিন তাকে ব্লক করে দেওয়া হয়েছে ।
যারা বর্তমানে লেখাপড়া করতেছো তারা এই কথাটা খুব ভালো ভাবে মনে রেখো ছেলেদের সফল হতে হয় আর মেয়েরা সফল দেরকে খোজে তাই লেখাপড়ার সময় মেয়েদের পেছনে না ছুটে সময় টা লেখাপড়ার পেছনে দেও তাহলে জীবনে ভালো কিছু হবে, সফলতা অর্জন না করতে পারলে খুব প্রিয় মানুষটিও ব্লক মেরে চলে যাবে।