বাসা থেকে বেরিয়ে অফিসের দিকে রওনা হয় শুভ্র। গাড়ি না পাওয়ায় হাঁটতে থাকে সে, কিছুটা পথ যাওয়ার পর হঠাৎ থমতে যায় শুভ্র। কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমছে, হাত পা কাঁপছে, বুক ধড়ফড়িয়ে লাফাচ্ছে এই বুঝি হার্ট এট্রাক হবে। আজ চার বছর পর তাঁর পুরনো প্রাক্তন নীলা তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে আছে। চার বছর আগে নীলার বিয়ে অন্য কারোর সাথে হয়ে যায়। নীলা আর শুভ্রের সম্পর্কের কথা তাঁদের পরিবার জেনে যায়। যদিও শুভ্রের পরিবার নীলাকে মেনে নেয় তবে নীলার পরিবার শুভ্রকে মানতে পারেনি। একজন বেকার ছেলের কাছে তাঁরা নীলাকে বিয়ে দিবে না। শুভ্র তখন মাস্টার্স কমপ্লিট করে জবের জন্য বিভিন্ন জায়গায় ইন্টারভিউ দিচ্ছিলো। শুভ্র বেকার ছিলো তাই তারা নীলাকে জোর করে অন্য এক ছেলের সাথে বিয়ে দিয়ে দেয়।
সেই দিন অনেক কেঁদেছিলো শুভ্র, এক বন্ধ রুমের মধ্যে চিৎকার করে কেঁদেছে কিন্তু তাঁর কান্না কেউ শুনতে পায়নি। শুভ্র ভেবেছিলো হয়তো আর কোনদিনই তাদের দেখা হবে না। কিন্তু নিয়তি তাদের ঠিক আবার এক করে দিলো। এত বছর পর দুজন দুজনকে দেখে কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলে।অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে তাঁরা।নীলার চোখে জল টল-মল করছে কখন যানি চোখের কোনা বেয়ে গড়িয়ে পড়ে। দুজনের মনে দুজনের প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা এখনো আছে।
হায়! এই বুঝি ভালোবাসা!
শুভ্র নরম গলায় শুধালো, “কেমন আছো নীলা”
“যেমটা থাকার কথা ছিলো ”
“বিয়ের পর তো তোমার পড়নে টক-টকে লাল শাড়ি, কপালে টানা সিঁদুর, হাতে শাখা-পলা থাকার কথা ছিলো, কিন্তু তা না হয়ে তোমার পড়নে সাদা শাড়ি কেন.? কপাল, হাত খালি কেন.? কোথায় তোমার লাল শাড়ি.? কোথায় শাখা-পলা আর সিঁদুর.?”
“তাঁর চলে যাওয়ার পরে সব দাহ করে দিয়েছি”
“ঠিক বুঝলাম না”
“বুঝে কোন লাভ আছে কি.? বাদ দাও। তুমি বিয়ে করোনি শুভ্র.? ”
“বিয়ে! হ্যাঁ করেছি তো। তবে সে এখন আর আমার নেই চার বছর আগে সে অন্য কারো হয়ে গেছে।”
“তুমি আমার প্রথম ভালোবাসা ছিলে ঠিকি কিন্তু শেষ ভালোবাসা আর হতে পারোনি।”
“নীলা”
“হুম”
“তোমার কি কখনো অনুশোচনা হয়নি.?”
“কি হয়নি!”
“অনুশোচনা”
“অত শক্ত কথা আমি বুঝি না”