পৃথিবীর সর্বাধিক শ্রেষ্ঠ সম্পর্কগুলোর একটি হলো, ছাত্র-উস্তাযের সম্পর্ক। অন্য কোন সম্পর্কের ধরণ এমন নয়। প্রকৃত ছাত্র-উস্তাযের সম্পর্কের মধ্যে যে অপার্থিব জিনিসগুলো থাকে, তা নিঃসন্দেহে অন্য কোন সম্পর্কে খুঁজে পাওয়া অসম্ভব।
আপনি যখন একজন উস্তাযের প্রকৃত ছাত্র হতে সক্ষম হবেন— আপনি তাঁর জন্য নির্দ্বিধায় জীবন দিয়ে দিতেও সক্ষম হবেন। আপনার প্রাণাধিক প্রিয় হয়ে উঠবেন তিনি।
একজন প্রকৃত উস্তাযের সাথে প্রকৃত ছাত্রের সুসম্পর্কটার সৃষ্টি হয় ইলমে ওহীর ভাগ-বিতরণের মধ্য দিয়েই। একজন উস্তায তাঁর ছাত্রকে শেখান—কীভাবে সত্য-শুদ্ধ পথে হাঁটতে হয়। কীভাবে রবের পাঠানো আসমানী উপহাড়ের সঠিক জ্ঞান অর্জন করে সুন্দরতম সফলতা অর্জনে সমর্থ হওয়া যায়। এই কাজগুলোর মধ্য দিয়েই গড়ে ওঠে সেই অপার্থিব সুসম্পর্ক। এই যে একটা বিষয়—এটা কি অপরাপর সম্পর্কগুলোর মধ্যে অদৌ খু্ঁজে পাওয়া সম্ভব!? নিশ্চয়ই না।
এই যে দিন কয়েক আগে একজন কিংবদন্তি উস্তাযকে কে দাফন করা হলো। চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন তিনি।রবের মেহমান হলেন। তাঁর স্বজনদের ব্যথিত হৃদয় কাঁদলো তাঁর জন্য। অশ্রুতে সিক্ত হলো নয়ন। এই ক্রন্দনের নিশ্চয় কোন কারণ আছে। ভাই কেঁদেছেন ভাই হওয়ায়। এক মা-বাবার সন্তান হওয়ায়। সহোদর ভাই হওয়ায় যে হৃদ্যতা তৈরী হয়েছে তাঁদের মধ্যে সেই হৃদ্যতা কাঁদিয়েছে ভাইকে। হৃদয় আঘাতে আঘাতে ছিন্ন করেছে।
তাঁদের এই হৃদ্যতা কিন্তু সেই সৌরভ ছড়ানো কাজের মধ্য দিয়ে হয়নি। যে সৌরভ ছড়ানো কাজের মধ্য দিয়ে সৃজন হয়—অতীন্দ্রিয়-অপার্থিব উস্তায-ছাত্রের সম্পর্ক। যে সম্পর্ক পৌছেঁ দেয় হৃদ নগরের শ্রেষ্ঠতম স্থানে।
উনার প্রকৃত ছাত্ররাও কেঁদেছে উনার চির বিদায়ে ।নোনাজল ঝরিয়ে গন্ডদেশ ভিজিয়ে একাকার করেছে।এই যে কান্না— এই কান্নার মতো কান্না তো অন্য কারো কান্না নয়। এই কান্না তো সেই কান্না, যেই কান্নায় স্বার্থের ছিটেফোঁটাও নেই। নেই কোন অভিনয়-ছলনা। যা চোখ দিয়ে ঝরিয়েছে ‘ইলমে ওহীর’ মাধ্যমে সৃজিত পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ভালোবাসার শহরের জোয়ার।