আকাশ মেঘেদের দখলে আজ। খানিকক্ষণ পর–পর কাঁদছে আকাশ। এখন বর্ষাকাল। আমাদের হাওর পানে তাকালে এখন ভাল্লাগে বেশ। যেনো দিগন্তহীন মিনি সমুদ্র। অ-নে-ক দূরে অবস্থিত সবুজ বৃক্ষদের ঝাপসা সারিবদ্ধতা চোখে আটকে শুধু। বৃষ্টি সহ বাতাস এলে পানিতে যে ঢেউয়ের উঠা–নামার সৌন্দর্য চোখ দেখতে পায়, তা বর্ণনাতীত। এমন সময় হাওরের ছোট নৌকায় বসে থাকলে তো ভালো লাগা যেনো আকাশ ছুঁয়।
আমাদের সৌভাগ্য এটা— আমাদের ইচ্ছে হলেই আমরা বর্ষার যে কোন সোনালি বিকেলে আকাশের শুভ্রতা–আর সুনীলতার শোভায় ভাসতে ভাসতে অথবা সন্ধ্যার লালিলামার মায়াবী রূপের রঙ দিল–মনে মাখতে–মাখতে, হাওড়ের এপাশ–ওপাশ ঘুরে বেড়াতে পারি এক আকাশ ভালো লাগার একান্ত ছোঁয়ায় থেকে। পারি এটাও— হাওর পারের মাঝির নৌকায় বসে প্রভাতের সফেদ–কালো আকাশে মেঘেদের ভেসে বেড়ানোতে আর হৃদ জমিনের গভীর ছুঁয়ে যাওয়া ঝিরিঝিরি অথবা শোঁ–শোঁ বাতাসে, অপূর্ব আনন্দ–পুলকের ফাঁক দিয়ে আকাশসম তৃপ্তি খুঁজে পাওয়া; অতঃপর সাঁ–সাঁ বাতাসের তালে–তালে হাওর–জলের ঢেউয়ের মধুমাখা অস্ফুট ধ্বনি কান পেতে শুনে কানের তৃষ্ণা নিবারণ করা। কখনো–সখনো শাপলার রাজ্যে প্রবেশের পর লাল–হলুদ–আর সাদা রংয়ের সুন্দর মিলনে পলকহীন চোখে তাকিয়ে থেকে চমৎকৃত হওয়া।
এছাড়াও পারা যায়— তেজহীন–মৃদু রোদেলা দুপুরে তার কিনারায় বসে শান্ত বাতাস গায়ে মাখতে–মাখতে, অন্তরঙ্গ কাউকে নরম গলায় হৃদয়ে জমে থাকা অব্যক্ত কথাদের শুনিয়ে তাদের মুক্তি দেওয়া। অতঃপর খানিকক্ষণের জন্য নৈ:শব্দতায় ডুব দেওয়া। সূর্যের আলোয় চিকচিক করতে থাকা পানি দেখে হঠাৎ কোন একজন বলে ওঠা— ‘দৃশ্যটা চমৎকার না বন্ধু?’
পারা যায়— বর্ষার হর-রোজের হর-ওয়াক্ত তার আঙ্গিনায় বসে তার অভূতপূর্ব প্রেমে হাবুডুবু খাওয়া। সে বর্ষার পর হারিয়ে যাবে জেনেও তাকে প্রতিটা প্রহরের জন্য খুব করে চাওয়া।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. আব্দুর রহমান
লেখা পাঠানোর ইমেইল: sahityapata24@gmail.com