৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা। এর তিনদিন পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। হাসিনার ভারতে অবস্থান নিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো বিশেষ করে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী অসন্তোষ প্রকাশ করছে।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতারাও হাসিনাকে বিচারের আওতায় আনার দাবি তুলেছেন। এ পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা দায়ের হয়েছে, যার মধ্যে গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে তদন্ত চলছে। এই পরিস্থিতিতে হাসিনাকে ভারতে অবস্থানের বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে, এবং তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য চাপ বাড়ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ওপর।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে, হাসিনাকে ভারতে থেকে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা উচিত। তবে, হাসিনার নির্দেশনাগুলো নিয়ে তার বিরক্তি প্রকাশ করেছেন, যা তিনি দিল্লির সেফ হাউজ থেকে দিচ্ছেন।
বাংলাদেশ-ভারত বন্দি বিনিময় চুক্তি অনুযায়ী, রাজনৈতিক বিবেচনায় কোনো মামলা হলে প্রত্যর্পণ করা সম্ভব নয়। তবে, হত্যা ও সহিংসতার মতো অপরাধগুলো রাজনৈতিক মামলা হিসেবে বিবেচিত হবে না। তাই হাসিনার বিরুদ্ধে যেসব মামলা হয়েছে, সেগুলো প্রত্যর্পণের আওতায় পড়তে পারে।
যদি ভারত হাসিনাকে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, তাহলে তাকে ফেরানো কঠিন হবে। কারণ, রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য ভারতের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তবুও, ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কের জোরদারকরণের প্রেক্ষাপটে হাসিনার ইস্যুটি ভারতের জন্য একটি অস্বস্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।
‘দ্য কনভারসেশন’ বলছে, কেবল বন্দি বিনিময় চুক্তি নয়, বরং কূটনৈতিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই হাসিনাকে ফেরত আনার সম্ভাবনা বেশি। এ ঘটনায় বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক, অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, এবং কূটনীতির জটিলতার এক গভীর চিত্র ফুটে উঠেছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. আব্দুর রহমান
লেখা পাঠানোর ইমেইল: sahityapata24@gmail.com