সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের ষষ্ঠ ব্যাচের শিক্ষার্থী ডা. অপরাজিতা আঁখিকে আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারীদের বিচারের দাবিতে ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করেছেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা সাতক্ষীরা-কালিগঞ্জ সড়ক বন্ধ করে মানববন্ধনে অংশ নেন। রোববার (১৪ জুলাই) সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের প্রথম গেটে সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন করেন তারা। আন্দোলনরত সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী রোকাইয়া বলেন, ডা. অপরাজিতা আঁখিকে সাতক্ষীরা মেডিকেলে পড়া অবস্থায় গাইনি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও একাডেমিক কো-অর্ডিনেটর ডা. প্রসাদ বিশ্বাসের ছেলে রাহুল বিশ্বাসের সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের পর শ্বশুর বাড়িতে তার ওপর নির্যাতন করা হতো। নিজের মায়ের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ না করলে তাকে ডির্ভোসের হুমকি দিতেন স্বামী রাহুল বিশ্বাস। নানামুখী নির্যাতনের শিকার হয়ে তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। এমন মর্মান্তিক ঘটনায় প্ররোচনাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
শিক্ষার্থী নওশাদ নাহিদ বলেন, যত দ্রুত সম্ভব দোষীদের শাস্তির দাবি জানাই। এইসঙ্গে সামেকের গাইনি বিভাগের প্রধান ও একাডেমিক কো-অর্ডিনেটর ডা. প্রসাদ বিশ্বাসকে অপসারণ করতে হবে। দাবি না মানলে আমরা ক্লাসে ফিরব না। শিক্ষার্থী ডা. ইভা বলেন, ‘তৃতীয় বর্ষে থাকাকালীন ডা. অপরাজিতা আঁখির বাবা মারা যান, এরপর তার একমাত্র ভাইও মারা যায়। বাবা-ভাই হারানোর শোক এবং শ্বশুরবাড়ি নিয়ে মানসিকভাবে চাপে থাকতেন তিনি।’
এদিকে, মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা সামেকের গাইনি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও একাডেমিক কোঅর্ডিনেটরের রুমের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। স্লোগানে স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে গোটা ক্যাম্পাস। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. রুহুল কুদ্দুস বলেন, ‘আমরা এখনো নিশ্চিত না, ঘটনা কী হয়েছে। তিনি অন্য জেলায় তার বাসায় ছিলেন। শিক্ষার্থীরা আমাদের এখনো কিছু জানায়নি। প্রসঙ্গত, মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে ডা. অপরাজিতা আঁখি শনিবার (১৩ জুলাই) তার বাবার বাড়ি যশোরের অভয়নগরে আত্মহত্যা করেন। মৃত্যুর পর আঁখির ১২ পৃষ্ঠার সুইসাইড নোড ও সহপাঠীদের সঙ্গে হোয়াটস্যাপ শেয়ার করা কিছু মানসিক নির্যাতনের বর্ণনার কিছু কথপোকথন প্রকাশ্যে এসেছে।