পূবাল দেশের ও মাঝি ভাই ধীরে তরী বাইয়া,
কোন দেশেতে যাইবা তুমি রঙিন পাল উড়াইয়া।
ওই গগনে মেঘ জমেছে উত্তর কোণ ঘেঁষে,
চমকানি দেয় বিজলী ছটা হুড়ুমদাড়াম শেষে।
বাঁধা তরী ওপারেতে ঢেউয়ের দোলায় দোলে,
কালচে মেঘে আবছা আঁধার বাবলা বনের কোলে।
ফিরফিরি বহে ঠান্ডা হাওয়া শীতল করে দেহ,
বৈশাখী বাবুর ভয়াল সাজে নাও ছাড়ে না কেহ।
বালুতটে দূরে কিচিমিচি করে গাঙ শালিকের দল,
কিসের আশে গাঙচিল যেন ঘুরছে অবিরল।
জোয়ারের ঠেলায় কানায় কানায় দুকুল ছাপালে পানি,
ওগো- এখনই কিনারে ভীড়াও তোমার ভরাট নৌকাখানি।
ওই জলে ধেনু রাখাল বেনু হস্তে ধারণ করি,
গোয়াল মুখো ছুটছে তারা হয়ে আজ মরিমরি!
জরুরী আভাস পেয়ে তারা আজ গোধুলী বেলার আগে,
ধাবিত হয়েছে গৃহের পানে পদুর্ধ গতিবেগে।
শূন্য কলস বাওয়ালী বধু ঘোমটা মুড়ি দিয়া,
হঠাৎ এসে যাচ্ছে চলে ঘোলাটে জল ভরিয়া।
দেখতে দেখতে সত্যিরে ভাই আইছে এবার ঝড়,
গাছগাছালি পাখপাখালি কাঁপছে থরথর।
উথালপাতাল করছে আহা নদীর বুকে ঢেউ,
ওভাই মাঝি দেখোনা চাহি কূলেতে নাই কেউ।
ঘনিয়ে এলো সন্ধ্যা এবার কেমনে ফিরি ঘরে,
সঙ্গী আমার নাইরে কেহ পড়েছি দারুণ ফ্যারে।