বাংলাদেশ, নেপাল, এবং ভারতের মধ্যে বিদ্যুৎ আদান-প্রদান নিয়ে যে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি হতে যাচ্ছে, তা শুধু তিন দেশের জন্য নয়, বরং গোটা দক্ষিণ এশিয়ার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। জ্বালানি সহযোগিতা ও সংযোগ বৃদ্ধি যে অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম চাবিকাঠি, এটি তারই একটি বাস্তব প্রতিফলন। বিশেষ করে এমন সময়ে, যখন বাংলাদেশ তার ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা পূরণে বিদেশি উৎসের ওপর নির্ভরশীল হয়ে উঠছে।
বাংলাদেশ-নেপাল বিদ্যুৎ চুক্তির সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ৩ অক্টোবর। এই চুক্তির মাধ্যমে নেপাল থেকে ভারতীয় সঞ্চালন লাইন ব্যবহার করে বাংলাদেশে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। যদিও চুক্তির দিন-তারিখ এখনও নিশ্চিত হয়নি, তবুও সকল পক্ষ ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এগোচ্ছে।
চুক্তিটি বাস্তবায়িত হলে তা শুধুমাত্র বিদ্যুৎ সরবরাহে সহযোগিতা নয়, বরং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্যও একটি উদাহরণ হয়ে দাঁড়াবে। নেপাল, যেটি তার বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াতে সক্ষম হয়েছে, বাংলাদেশে সেই বিদ্যুৎ রপ্তানির মাধ্যমে নতুন আয়ের উৎস তৈরি করতে পারে। অপরদিকে, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ আমদানি করে তার অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে।
এখানে ভারতের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। ভারতীয় সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহের এই প্রক্রিয়া আঞ্চলিক সহযোগিতার একটি ভালো উদাহরণ। এটি দেখায় যে, রাজনৈতিক সীমারেখা অতিক্রম করে অর্থনৈতিক স্বার্থে দেশগুলো কীভাবে একে অপরের সঙ্গে কাজ করতে পারে।
তবে, এই চুক্তি শুধু বিদ্যুৎ আমদানি-রপ্তানির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি ভবিষ্যতের জন্য একটি রোডম্যাপ। দক্ষিণ এশিয়ায় জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এরকম উদ্যোগগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনের সময়ে নবায়নযোগ্য শক্তির উৎসগুলোকে কাজে লাগিয়ে একে অপরের সঙ্গে সহযোগিতা করার সময় এখনই।
যদি ৩ অক্টোবর চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, তবে এটি হবে আঞ্চলিক জ্বালানি বাজারে বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা।